সড়কে জন্ম নেওয়া সেই নবজাতকের ঠাঁই হলো শিশু নিবাসে

ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় মায়ের মৃত্যুর আগ মুহূর্তে জন্ম নেওয়া শিশু ফাতেমাকে সমাজসেবা অধিদফতর পরিচালিত রাজধানীর আজিমপুরের ছোটমণি শিশু নিবাসে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১২টায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ায় তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাজসেবা কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেন। 

এ সময় হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. ওয়ায়েজউদ্দীন ফরাজি, জেলা সমাজসেবার উপ-পরিচালক আবু ওবায়দুল ওয়ালী উল্লাহ, ফাতেমার দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

ময়মনসিংহ মেডিক্যালের নবজাতক বিভাগের প্রধান নজরুল ইসলাম বলেন, ‌‘শিশুটির জন্ডিস, শ্বাসকষ্ট ও রক্তস্বল্পতাসহ সব ধরনের সমস্যা দূর হয়েছে। সুস্থ অবস্থায় অন্য মায়ের দুধ পান করতে পারছে। মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ বেলা ১১টার পর তাকে ছুটি দেওয়া হয়েছে।’

আরও পড়ুন: ট্রাকচাপায় প্রাণ গেলো স্বামী-স্ত্রী-সন্তানের

এদিকে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. ওয়ায়েজউদ্দীন ফরাজী জানান, ফাতেমা সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ায় তাকে ছুটি দিয়ে সমাজসেবা অধিদফতরের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তাস্তর করা হয়েছে।

জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবু ওবায়দুল ওয়ালী উল্লাহ জানান, জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক এবং পরিবারের সম্মতি নিয়ে ফাতেমাকে সমাজসেবা পরিচালিত ঢাকার আজিমপুরের ছোটমণি শিশু নিবাসে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তাকে যত্নে লালন-পালন করা হবে। শিশুটি ছোটমণি শিশু নিবাসে ৬ বছর পর্যন্ত থাকতে পারবে। তার আগেই দাদা-দাদি লালন-পালনে সক্ষমতা হলে তাদের কাছে ফেরত দেওয়া হবে।’

ফাতেমাকে বিদায় দেওয়ার সময় দাদা মোস্তাফিজুর রহমান কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ‘ফাতেমার জন্য সরকার উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিদায় দিতে কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু তার ভালো হবে চিন্তা করে সম্মতি দিয়েছি। আমার পরিবারের তিন জন ট্রাকের চাপায় মারা গেছে। এই ফাতেমা হচ্ছে আমার ছেলে জাহাঙ্গীর ও পুত্রবধূ রত্নার স্মৃতিচিহ্ন। সে মানুষের মতো মানুষ হবে এটাই আমার চাওয়া।’

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ট্রাকচাপায় একই পরিবারের তিন সদস্য নিহত হন। দুর্ঘটনায় মায়ের মৃত্যুর আগ মুহূর্তে জন্ম নেয় শিশু ফাতেমা। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে একটি বেসরকারি প্রাইভেট হাসপাতালে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।