মাঠরক্ষার আন্দোলনে আপনাদের সঙ্গে আছি: সুলতানা কামাল

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার শতবর্ষী বলাইশিমুল সরকারি খেলার মাঠরক্ষা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।

শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকালে বলাইশিমুল মাঠরক্ষা গণকমিটির পক্ষ থেকে বলাইশিমুল ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত মাঠরক্ষা মহাসমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এই সংহতি প্রকাশ করেন।

সুলতানা কামাল বলেন, ‘আপনারা এলাকার শতবর্ষী সরকারি একটি মাঠরক্ষার জন্য যে আন্দোলন করে যাচ্ছেন- কিন্তু মাঠরক্ষা করতে গিয়ে আপনারা মামলা-হয়রানির শিকার হচ্ছেন, এ লজ্জা প্রকাশ করার কোনও ভাষা আমার জানা নেই। আশা করি, আপনাদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার হবে এবং পুলিশ আর কোনও হয়রানি করবে না। এরপরও যদি হয়রানি করা হয় তাহলে তা মেনে নেওয়া হবে।’

এলাকাবাসীর উদ্দেশে সুলতানা কামাল বলেন, ‘আপনারা জনগণের স্বার্থে আন্দোলন করছেন। ব্যক্তি স্বার্থে কিছু করছেন না। তবে আপনাদের আমি অনুরোধ করবো, অন্যায় কিছু করবেন না। বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করবেন না। শান্তিপূর্ণ আপনাদের এই আন্দোলনে আমিও আপনাদের সঙ্গে আছি এবং থাকবো। নৈতিক এই আন্দোলনের বিজয় সুনিশ্চিত।’

বলাইশিমুল মাঠরক্ষা গণকমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিনুর রহমান মন্ডলের সভাপতিত্বে ও আহ্বায়ক আবুল কালাম আল আজাদের পরিচালনায় এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ‘নিজেরা করি’র নির্বাহী প্রধান খুশী কবির, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দ রিজওয়ানা চৌধুরী, তেঁতুলতলা মাঠরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক সৈয়দা রত্না, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবির প্রমুখ।

স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও মাঠরক্ষা গণকমিটির লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল সরকারি খেলার মাঠটি এক একর ৮৭ শতাংশ জমিতে অবস্থিত। এর মধ্যে ৭৬ শতাংশ জমি স্থানীয় ব্যক্তিদের দখলে ছিল। উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে দখল করা জমি উদ্ধার করা হয়। পরে মাঠের শ্রেণি পরিবর্তন করে ৪৬ শতাংশ জায়গায় ২৩টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে পরে মাঠের সৌন্দর্য রক্ষার জন্য জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সেখান থেকে ১১টি ঘর সরিয়ে নিয়ে ১২টি ঘর নির্মাণের কাজ চলে। এরই মধ্যে ঘর ভাঙচুরের ঘটনায় মাঠরক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি এবং কিছুদিন পর আবার ঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আরও একটি মামলা করা হয়।

গত ১৪ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে বেঞ্চ বলাইশিমুল খেলার মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের বিরুদ্ধে করা রিটের শুনানি শেষে সেখানে কাজ চালানোর ওপর তিন মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ আগস্ট সকাল থেকে উপজেলা প্রশাসন কাজ বন্ধ করে দেয়।