ময়মনসিংহ মেডিক্যালে ‘নিউমোনিয়ায়’ দুই দিনে ২৫ শিশুর মৃত্যু, সতর্ক থাকার পরামর্শ

ময়মনসিংহের সীমান্ত এলাকা ধোবাউড়া উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের আবু সাঈদ-রুনা আক্তার দম্পতির ৫ মাস বয়সী জমজ দুই সন্তান রাফসান ও রাইমনি। শ্বাসকষ্ট ও কাশি নিয়ে গত ২৫ নভেম্বর ধোবাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। অবস্থার অবনতি হলে গত ২৭ নভেম্বর ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শীতজনিত কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাফসান ও রাইমনির পাতলা পায়খানা দেখা দেয়।

শিশু দুটির মা রুনা আক্তার জানান, শ্বাসকষ্টের কারণে দুধ টেনে খেতে পারছে না। প্রচণ্ড কান্নাকাটি করছে এবং পাতলা পায়খানা শুরু হওয়ায় দুই বাচ্চার খুব কষ্ট হচ্ছে।

শুধু রাফসান-রাইমনি না, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু ও নবজাতক ওয়ার্ডে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা পর্যন্ত মোট ৬২৩টি শিশু ভর্তি আছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ শিশুই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। আর আগের ২৪ ঘণ্টায় (১০টা পর্যন্ত) মারা গেছে ১৪টি শিশু, তার আগের ২৪ ঘণ্টাতেও মারা গেছে ১১টি শিশু। সবমিলিয়ে গত দুই দিনে ময়মনসিংহের এই এক হাসপাতালেই শীতজনিত রোগে ২৫ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাক্তার ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজি বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, মারা যাওয়া শিশুরা সবাই শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিল। শিশুদের চিকিৎসায় পর্যাপ্ত ওষুধসহ সব ধরনের প্রস্তুতিও রয়েছে জানান তিনি।

হাসপাতালে নবজাতক ওয়ার্ডের প্রধান ডাক্তার নজরুল ইসলাম জানান, ওয়ার্ডে শ্বাসকষ্ট এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যায় বেশি। শীত বাড়ার সাথে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে আশঙ্কা এই চিকিৎসকের। নবজাতক শিশুদের চিকিৎসায় চিকিৎসক নার্স এবং অন্যান্য কর্মচারীরা তৎপর আছে বলেও জানান তিনি।

শিশু ওয়ার্ডের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার বিশ্বজিৎ চৌধুরী জানান, শীত শুরু হওয়ার সাথে সাথে হাসপাতালের ওয়ার্ডে শীতজনিত শ্বাসকষ্ট এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।

শীতের সময়ে বাড়িতে শিশুদের বাড়তি যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘বাড়িতে শীতের কাপড় পরিয়ে রাখা এবং অভিভাবকদের শিশুদের প্রতি বাড়তি যত্ন নেওয়া উচিত।’ ঠান্ডা-কাশি শুরু হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথাও জানান তিনি।