‘আগে হাঁটুপানিতে চলাফেরা করতাম, ওটাই ভালো ছিল। এখন ড্রেনসহ রাস্তার কাজ শুরু করে দুই মাস ধরে চলছে, কাজ আর শেষ হয় না। নির্মাণকাজ ধীরগতিতে হওয়ায় বাসার সামনে রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করা যায় না। বাচ্চাদের স্কুলে পরীক্ষা শুরু হয়েছে, তাদের সময়মতো নিয়ে যাওয়া যায় না। এমন দুর্ভোগ যে আর কত দিন পোহাতে হবে, কেউ বলতে পারছে না।’
শনিবার (১৮ নভেম্বর) সকালে ময়মনসিংহ নগরীর চরপাড়া প্রাইমারি স্কুল রোডের বাসিন্দা রানী বেগম আক্ষেপ করে বলছিলেন এসব কথা।
তিনি আরও জানান, দুই মাস ধরে রাস্তার কাজ শুরু করেছে। একদিন কাজ করলে দুই দিন বন্ধ থাকে। রাস্তা ভেঙে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। রাস্তার ওপরে ইট-বালু-সুরকির কারণে বাচ্চাদের নিয়ে চলাফেরা করা যায় না।
শুধু রানী বেগম নন, ময়মনসিংহ নগরীর অধিকাংশ ওয়ার্ডে নির্মাণকাজের ধীরগতিতে চরম দুর্ভোগে নগরবাসী। ময়মনসিংহ নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কেওয়াটখালী এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং সড়ক উন্নয়নকাজ শুরু করা হয়েছে তিন মাস ধরে। কিছু কাজ শুরু করার পরেই কাজ বন্ধ রেখেছে ঠিকাদার।
ওই এলাকার বাসিন্দা রমজান আলী জানান, ড্রেনেজ কাজ করতে গিয়ে রাস্তায় বড় বড় গর্ত করে রেখেছে। আর কাজ বন্ধ করে রাখায় এসব গর্ত দিয়ে মানুষ চলাচল করতে পারছে না। এই সড়ক দিয়ে বয়স্ক, মহিলা এবং শিশুদের যাতায়াত চরম কষ্টের মধ্যে করতে হচ্ছে। এই নিয়ে সিটি করপোরেশন কোনও উদ্যোগ দেখা যায় না।
একই এলাকার গৃহবধূ নাহার জানান, সড়কে কাজ বন্ধ করে রাখায় মানুষের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুতগতিতে কাজ শেষ করার দাবি করেছেন তিনি।
ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এইচ এম খালেকুজ্জামান জানান, সিটি করপোরেশনের সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নের কাজ ধীরগতির কারণে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। সময়মতো কাজ শেষ করে নাগরিক দুর্ভোগ লাঘবের দাবি করেছেন তিনি।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সড়ক উন্নয়ন ড্রেনেজ নেটওয়ার্কসহ নাগরিক সেবা উন্নতকরণের লক্ষ্যে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু হয় গত ২০২২ সালে। কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে।
কাজের ধীরগতি ও কাজ বন্ধ করে রাখায় নগরবাসীর দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম মিঞা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, নগরবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার জন্য ঠিকাদারদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। তবে কারোর বিরুদ্ধে গাফিলতি পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান তিনি।