বিদেশে থেকেও নাশকতার মামলার আসামি, দেশে ফিরে কারাগারে

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় ঘটনার সময় বিদেশে থেকেও নাশকতার মামলায় আসামি হয়ে জেল খাটছেন এক প্রবাসী। তার নাম আক্কাছ মিয়া। তিনি উপজেলার দলপা ইউনিয়নের রামজীবনপুর গ্রামের মৃত মাহমুদ হোসেনের ছেলে।

পুলিশ জানায়, গত ২১ নভেম্বর কেন্দুয়ার বাদে আঠারোবাড়ী গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে জামাল উদ্দিনের করা মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে আক্কাছ মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে গ্রেফতারের পরের দিন আদালতে পাঠালে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

আক্কাছ মিয়ার স্বজন ও প্রবাসে থাকার কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে দুবাই গিয়ে ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আসেন। মামলায় তাকে দলপা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবে উল্লেখ করে পুলিশ। তবে তিনি আওয়ামী লীগের কোনও নেতা বা কর্মী নয় বলে নিশ্চিত করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজিম উদ্দিন ফকির।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৩০ মে উপজেলা সদরের হাইস্কুল সড়কের জামাল উদ্দিনের বাসা ও উপজেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় কেন্দুয়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল হক ভূঁইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম জুয়েল, তাজুল ইসলাম, আব্দুল কাদিরসহ ৬০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। মামলায় আক্কাছ মিয়াকে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি দেখানো হয়। গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

আক্কাছ মিয়ার মেয়ে সোমা আক্তার ও ছেলে লিংকন মিয়া বলেন, বাবা ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে দুবাই যান। পরে পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হলে সেখানে থেকেই রিনিউ করেন। ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বরে দেশে আসেন। মসজিদের জায়গা নিয়ে বিরোধ থাকায় এলাকার একটি পক্ষ তাকে আওয়ামী লীগ বানিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। বিষয়টি নিয়ে সেনাবাহিনীর দ্বারস্থ হই। ক্ষোভে তাকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করানো হয়েছে। আমরা এর ন্যায়বিচার চাই।

দলপা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজিম উদ্দিন ফকির বলেন, ‘আক্কাছ মিয়া ১০ বছর ধরে বিদেশ থাকেন। তিনি আওয়ামী লীগ বা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন। বছর দেড়েক আগে দেশে এসেছেন। তাকেও ২০১৬ সালের নাশকতার মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে শুনে অবাক হয়েছি।’

ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিম উদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘আক্কাছ মিয়া কোনও দিন রাজনীতি করেন নাই। যে মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই মামলার ঘটনার তারিখ ২০১৬ সালের। তখন তিনি দুবাই ছিলেন। বিদেশ থেকে কীভাবে ভাঙচুর করলো কিংবা নাশকতার মামলার আসামি হলো, পুলিশ জানে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘আক্কাছ মিয়া প্রবাসে ছিলেন এমন তথ্য জানা নেই। বিষয়টি যাচাইয়ের পরে পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’