আইনজীবীকে মারধর করে পুলিশে দিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় এক আইনজীবীকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। শনিবার বিকালে একটি রাজনৈতিক মামলায় সন্দেহজনক আসামি হিসেবে ওই আইনজীবীকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এর আগে শুক্রবার রাতে কেন্দুয়া পৌর শহরের আরামবাগ এলাকায় মারধরের ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীর নাম সঞ্জিত কুমার পণ্ডিত। তিনি কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর বাঘমারা গ্রামের বাসিন্দা ও নেত্রকোনা জজকোর্টের আইনজীবী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কেন্দুয়া শহরের আরামবাগ এলাকার বাসায় ছিলেন সঞ্জিত কুমার। এ সময় বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মী মামলার কথা বলে তাকে ডাক দেন। তিনি বাসা থেকে বের হলে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ হিসেবে আখ্যায়িত করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে পুলিশ তাকে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম হিলালীর বাসায় ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখায়। ২০২৩ সালের ৮ নভেম্বরের ওই ঘটনায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর মামলা করেন রফিকুল ইসলাম হিলালীর ব্যক্তিগত গাড়িচালক জামাল উদ্দিন। মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলসহ ৯৮ জনের নাম উল্লেখ ও ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

সঞ্জিত কুমারের একজন স্বজন বলেন, সঞ্জিত দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে আইন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। কখনও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। তার বিরুদ্ধে থানায় কোনও রাজনৈতিক মামলা নেই। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলার বাদী আলী রেজা কাঞ্চনের ওকালতনামায় স্বাক্ষর করায় তাকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

নেত্রকোনা কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মফিজ উদ্দিন শেখ বলেন, ‌‘সঞ্জিত কুমার পণ্ডিতকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার শামসের আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সন্ধ্যায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালতে তার পক্ষে দাঁড়াননি কোনও আইনজীবী।’

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আইনজীবী সঞ্জিত কুমারকে জেলা বিএনপির সদস্যসচিবের বাসায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘আইনজীবী সঞ্জিত কুমারকে আমাদের দলীয় লোকজন মারধর করেননি। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভুয়া, মিথ্যা ও বানোয়াট। তাকে কে বা কারা মারধর করে পুলিশে দিয়েছে, তা আমার জানা নেই।’