নেত্রকোনায় সাংবাদিক, চাকরিজীবী ও আ.লীগ নেতাসহ ৪৩৬ জনের নামে বিএনপি নেতার মামলা

নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলায় এক বছর আগে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগে আরও একটি মামলা করা হয়েছে। বুধবার উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মজলু মিয়া বাদী হয়ে থানায় মামলাটি করেন। বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা এই মামলায় ১৮৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী ও সাংবাদিকও আছেন।

বাদী মজলু মিয়া বলেন, ‘দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয় মামলা করতে হবে। তাই আমি মামলার বাদী হয়েছি। এতোদিন দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় মামলা করিনি।’

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, গত বছরের ১৬ জুলাই দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে খালিয়াজুরি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির প্রথম সভা দলীয় কার্যালয়ে চলাকালে আসামিরা অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভয়ভীতি দেখানোসহ কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়ে সভা পণ্ড করে দেন। এ ছাড়া রাস্তা বন্ধ করে ১৫টি মোটরসাইকেল ও তিনটি ইজিবাইক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। 

এ ব্যাপারে খালিয়াজুরি উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুর রউফ বলেন, ‘মামলার আসামিদের বিষয়ে আমার জানা নেই। বাদী আমার সঙ্গে পরামর্শ করেননি। এ নিয়ে আমাকে অনেকেই ফোন করছেন।’

গত বছর আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১৭ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত জেলায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ৬০টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ছয় হাজারের মতো আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে ডজনখানেক পেশাদার সাংবাদিক রয়েছেন।

মামলার আসামি সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এজাহারে যে সময় ও ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে, সে সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। আমাকে রাজনীতির তকমা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আমি কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত নই।’

সাংবাদিক মৃণাল কান্তি দেব বলেন, আমাকে হয়রানি করার জন্য আসামি করা হয়েছে। এ রকম কোনও ঘটনা আমার জানা নেই এবং এর সঙ্গে আমি সম্পৃক্তও নই।

খালিয়াজুরি প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘শফিকুল ইসলাম ও মৃণাল দেব পেশাদার সাংবাদিক। সহিংসতা সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ এনে তাদের এভাবে আসামি করা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

খালিয়াজুরি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুগবুল হোসেন বলেন, ‌‘মামলার পর অভিযান চালিয়ে তিন জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। অবশ্য এর মধ্যে বেশ কয়েকজন আসামি অন্য মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন।’