রাজশাহীতে চুরির অপরাধে শিশুর মাথার চুল কেটে নির্যাতন!

নির্যাতিত শিশুরাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় আবারও চুরির অপরাধে ট্রাকের সঙ্গে বেঁধে মাথার চুল কেটে কালি মাখিয়ে নাজমুল হক নামে এক শিশুকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার ভোরে পুঠিয়া সদরে খাঁন ফিলিং স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।

নির্যাতনের শিকার নাজমুল (১২) পুঠিয়া উপজেলার বারোইপাড়া গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে।

জানা গেছে, সদরের খাঁন ফিলিং স্টেশনে বিপি পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের সিডি প্লেয়ার চুরির অপবাদে ভোর থেকে নাজমুলকে একটি ট্রাকের সঙ্গে বেঁধে রাখে কর্মচারীরা। পরে সকাল ১০টার দিকে ওই পাম্পের কর্মচারীরা শিশু নাজমুলকে ব্যাপক মারধর করে মাথার চুল কেটে মুখে কালি মাখিয়ে দেয়। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজনের প্রতিবাদের মুখে পাম্পের কর্মচারীরা তাকে ছেড়ে দেয়।

মঙ্গলবার দুপুরে মারধরের ব্যাপারটি স্বীকার করে খাঁন ফিলিং স্টেশনের মালিক আল মামুন খাঁন বলেন, ‘বিপি পরিবহন নামে একটি বরযাত্রীবাহী বাস পথে আমার পাম্পে দাঁড়ায়। এরপর বাসের হেলপার-ড্রাইভার গাড়ি থেকে নেমে হাত-মুখ ধাওয়ার জন্য বের হয়। এ সময় নাজমুল ওই বাসের ভেতরে গান-বাজানোর সেটটি খুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাকে ধরে ট্রাকের সঙ্গে বেঁধে রাখে। পরে শুনি আমার পাম্পের ছেলেরা তার চুল কেটে দেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার পাম্পের কর্মচারীরা কাজটি অন্যায় করেছে। আমি সন্ধ্যায় ওই বাসের হেলপার-ড্রাইভারসহ পাম্পের কর্মচারী এবং নির্যাতিত ছেলেটি ও তার পরিবারকে নিয়ে বসবো। আমার অগোচরে তারা এই অন্যায় কাজটি করেছে। তাই একটা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Rajshahi Child Torture Photo 21.02 (2)নির্যাতিত শিশু নাজমুলের বাবা হাফিজুর রহমান বলেন, তারা আমার ছেলেকে মিথ্যা চুরির অপবাদ দিয়ে অন্যায়ভাবে মেরেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ বিষয়ে দুপুরে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ফিলিং স্টেশনে শিশু নির্যাতনের খবর এক সাংবাদিকের কাছে জানতে পারি। এরপর সেখানে পুলিশ পাঠাই। তবে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) দুপুরে মোবাইল ফোনের সিম চুরির অভিযোগে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার তারাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আরিফুল ইসলামকে (১২) গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় তারাপুর গ্রামের আসফার আলীর ছেলে এরশাদ আলী ও বরুমোল্লার ছেলে শুভকে কারাগারে পাঠানো হয়।

/বিটি/