আবুকে আত্মসমর্পণের আহ্বান, কোনও সাড়া নেই

চাঁপাইনবাবগঞ্জে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানচাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের জঙ্গি আস্তানায় থাকা জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানাচ্ছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ওই বাড়িতে আবু আলী নামের এক জঙ্গি তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অবস্থান করছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। আবু আলীর নাম ধরে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হলেও ভেতর থেকে কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে থেমে থেমে গুলির শব্দ পাওয়া গেলেও দুপুর ১২টার পর আর কোনও শব্দ আসছে না।  

বেলা ১২টার দিকে সোয়াট টিমের সদস্যরা বাড়ি লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছেন। বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে অপারেশন ঈগল হান্ট ফের শুরু করেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সোয়াট টিমের সদস্যরা। বুধবার ভোর থেকেই সিটিটিসি’র সদস্যরা শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের শিবনগর এলাকায় ওই বাড়িটি ঘিরে রেখেছে। রাতে অভিযানে বিরতি ঘোষণা করা হয়।  বুধবার (২৬ এপ্রিল) রাত ৯টা ৫ মিনিটে ওই আস্তানার সামনে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত এই অভিযান স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন সিটিটিসি’র স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের (এসএজি) উপ-পুলিশ কমিশনার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ‘আমরা এখনও ভেতরে প্রবেশ করতে পারিনি। ফলে ভেতরে কয়জন আছে, তা বলতে পারছি না।’ অন্য এক প্রশ্নের তিনি বলেন, ‘জঙ্গিরা চার থেকে পাঁচটি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। আমাদের ধারণা, তারা পুরাতন জেএমবির সদস্য।’ 

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িটির ভেতর আবু আলী নামে এক জঙ্গি ও তার স্ত্রীসহ কয়েকজন থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন সিটিটিসির সদস্যরা। একটি আমবাগানের ভেতরে বাড়িটির অবস্থান। বুধবার ভোরবেলা বাড়িটি ঘেরাও করার পরপরই কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সাধারণ লোকজনের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণের জন্য আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

সিটিটিসি সূত্রে আরও জানা গেছে, বাড়ির মালিকের নাম ঝিন্টু হাজি। তিনি সেখানে থাকেন না। আবু আলী নামের একজন প্রায় দুই মাস আগে বাড়িটি ভাড়া নেয়। স্ত্রীকে নিয়ে সে ওই বাড়িতে ওঠে। এই আবু আলী-ই জঙ্গি বলে ধারণা পুলিশের।চাঁপাইনবাবগঞ্জে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান

কাউন্টার টেরোরিজমের এক কর্মকর্তা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সকালে প্রথমে কানসাট ইউনিয়নের আব্বাস বাজার এলাকার তিনটি বাড়ি ঘেরাও করা হয়। তবে সেখানে জঙ্গির কোনও অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। পরে শিবগনগর এলাকায় অন্য একটি বাড়ি ঘেরাও করে তল্লাশি শুরু করতে যায় কাউন্টার টেরোরিজমের সদস্যরা। এ সময় ওই বাড়ি থেকে পুলিশকে লক্ষ করে গ্রেনেড ছোড়া হয়। জবাবে পুলিশও কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এখন পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

শিবগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, 'মঙ্গলবার রাত থেকেই সিটিটিসি'র সদস্যরা ওই বাড়িতে অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করেন।’

উল্লেখ্য, বুধবার ভোর সাড়ে ৫টা থেকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে  চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবনগর এলাকার একটি বাড়ি ঘিরে রাখে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) সদস্যরা। এরপর বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান শুরু করেন সোয়াট টিমের সদস্যরা। অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’।

/এফএস/ 

আরও পড়ুন- 

শিবগঞ্জের আস্তানায় থেমে থেমে গুলির শব্দ