ঘুষ দিতে রাজি না হয়ে প্রতিবাদ করায় সহকর্মীদের সামনে প্রাথমিক স্তরের এক শিক্ষককে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী আব্দুর রশিদ বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটান। শিক্ষকদের অভিযোগ, দাবিকৃত ঘুষ না পেয়ে উপজেলার ডায়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশিদুল হাসানের মাথা ফাটিয়ে ও হাত ভেঙে দেওয়া হয়।
স্থানীয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ময়নুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘উপজেলার ডায়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশিদুল হাসান ও তার বন্ধু নন্দলালপুর এসএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন বুধবার সকালে উপজেলা পরিষদ ভবনের তিনতলায় প্রাথমিক অফিসে আসেন। সহকর্মী শিক্ষক আলাউদ্দিনের ‘লামগ্র্যান্ড’ বা স্বেচ্ছায় অবসর যাপনের বিল প্রস্তুত করার জন্য অফিস সহকারী আব্দুর রশিদের শরনাপন্ন হয়ে তার পরামর্শ চান।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, ‘ঘুষ ছাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে কোনও কাজ হয় না। অফিস সহকারী আব্দুর রশিদ ও আব্দুল হাকিমের নেতৃত্বে শাহজাদপুরে প্রাথমিক শিক্ষাস্তরের সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন থেকেই ঘুষ বাণিজ্য করছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারও এদের কাছে অসহায়।’
প্রত্যক্ষদর্শী প্রধান সহকারী শিক্ষক শিরিন আক্তার বলেন, ‘কি নিয়ে যেন তর্ক হচ্ছিল। একপর্যায়ে আব্দুর রশিদ ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক রাশিদুল হাসানকে মারপিট করেন।’
উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাঈদা সিদ্দিকী বলেন, ‘ঘটনাটি একবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। বিষয়টি আমি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছি।’ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দীক মোহাম্মদ ইউসুফ রেজার বক্তব্য নিতে বারবার যোগাযোগ করার পরও তাকে পাওয়া যায়নি।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাজা মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘শিক্ষককে মারপিট করার বিষয়টি একেবারেই ন্যাক্কারজনক। মামলার পর শিক্ষা অফিসের কর্মচারী রশিদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রশিদ ছাড়াও শাহজাদপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী আব্দুল হাকিমসহ অন্যান্য সহকারীর বিরুদ্ধেও শিক্ষক হয়রানির নানা অভিযোগ রয়েছে।’
/এমও/