রাউধার বাবার অভিযোগগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছে সিআইডি

রাউধা আথিফমালদ্বীপের নাগরিক ও রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী রাউধা আথিফের মৃত্যুর দিন ভোরে তার মোবাইলে একটি বার্তা এসেছিল। বার্তায় লেখা ছিল- ‘তুমি বেহশতের ফুল হয়ে যাবে’। এই তথ্যটি এখন তদন্তকারী সংস্থার হাতে। এর সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাজশাহী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে রাউধার বাবা মোহাম্মদ আথিফ দাবি করেন, সেই বার্তার মাধ্যমে রাউধাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।

এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আসমাউল হক বলেন, ‘মালদ্বীপের পুলিশেরা রাজশাহীতে এসে রাউধার মোবাইল খুলেছিল। মোবাইলে ওই বার্তা আছে। রাউধার বাবার অভিযোগগুলো গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে আমরা তদন্ত করছি।’

এর আগে বুধবার (২৪ মে) দুপরে সংবাদ সম্মেলনে রাউধার বাবা মোহাম্মদ আথিফ বলেছিলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের কয়েক দিন আগে রাজশাহীর একটি রেস্টুরেন্টে রাউধার সঙ্গে এক যুবকের ঝগড়া হয়েছিল। সেই যুবক কে ছিল, তা জানা যাবে রেস্টুরেন্টের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করলে। সেই যুবককে আটক করা গেলে তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে।’

মোহাম্মদ আথিফ আরও বলেন, ‘পাসওয়ার্ড ছাড়া আইফোনে প্রবেশ সম্ভব নয়। কিন্তু কে বা কারা রাউধার মৃত্যুর পর তার আইফোনে ঢোকে এবং সেখান থেকে রাউধার বান্ধবী, মামলার একমাত্র আসামি সিরাত ও বন্ধু মহসিনের নাম ডিলিট করে দেওয়া হয়। মহসিন ও সিরাতের নাম কেন ডিলিট করা হলো এবং কে এই কাজটি করলো তা খুঁজে বের করা প্রয়োজন।’

তিনি দাবি করেন, রাউধাকে হত্যা করা হয়েছে। সে আত্মহত্যা করেনি। সংবাদ সম্মেলনে রাউধার বাবার পাশাপাশি তার আইনজীবী কামরুল মনিরও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

সিআইডির পরিদর্শক আসমাউল হক বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা আমরা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি।’

উল্লেখ্য, গত ২৯ মার্চ দুপুরে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাত্রী হোস্টেলের ২০৯ নম্বর কক্ষ থেকে রাউধার লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ৩১ মার্চ মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের মাধ্যমে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ওই প্রতিবেদনে রাউধা আত্মহত্যা করেছেন বলে উল্লেখ করে মেডিক্যাল বোর্ড।

পরে গত ১১ এপ্রিল রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজের পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাউধা আত্মহত্যা করেছে বলেই তাদের মনে হয়েছে।

রাউধার মৃত্যুর ১২ দিন পর গত ১০ এপ্রিল তার সহপাঠী সিরাতকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন রাউধার বাবা ডা. মোহাম্মদ আথিফ। রাজশাহীর আদালতে দায়ের করা ওই মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ দেন। সেই অনুযায়ী হত্যা মামলা রেকর্ড করে পুলিশ। এরপর মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। পরে রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা অপমৃত্যুর মামলার তদন্তের ভারও দেওয়া হয় সিআইডিকে। ২০ এপ্রিল থেকে মামলা দুটি তদন্ত শুরু করে সিআইডি।

/এআর/