তুফানের ‘ক্ষমতায়’ রুমকিও চাঁদাবাজ!

নির্যাতিতা কিশোরী ও তার মাকে ন্যাড়া করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকিবগুড়ায় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের বিষয়টি জেনেও আসামির স্ত্রীর প্ররোচনায় নির্যাতিতা ও তার মায়ের মাথা ন্যাড়া করে সমালোচিত বগুড়া পৌরসভার ২ নম্বর সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকিকে তার এলাকার মানুষ চেনে ‘ত্রাস’ হিসেবে। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতারের পরই আলোচনায় আসে এই নারী কাউন্সিলর। অভিযোগ রয়েছে, স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা ক্ষমতাসীন দলের নেতা এবং বিত্তবান হওয়ায় রুমকি কাউকে পাত্তাই দিতো না। তার বিরুদ্ধে পৌরসভার যেকোনও কাজের বিনিময়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া, অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা, মাদক ব্যবসাসহ নানান অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তার নানা অপকর্মে অতিষ্ঠ পৌরসভার এলাকাবাসী। সোমবার (৩০ জুলাই) রাতে রুমকি, তার মা-বাবা, বোন, ভগ্নিপতি ও তাদের সহযোগীরা গ্রেফতার হওয়ায় এলাকা এবং পৌরসভায় স্বস্তি দেখা দিয়েছে। এ উপলক্ষে এলাকায় মিষ্টি বিতরণও করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে রুমকির পরিবারের ভয়ে কেউ নাম পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হননি।

সোমবার (৩১ জুলাই) সকালে শহরের চকসুত্রাপুর ও বাদুড়তলা এলাকায় জনগণের সঙ্গে কথা বললে অনেকে রুমকি, তুফানসহ অন্যদের গ্রেফতারে সন্তোষ প্রকাশ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক জনপ্রতিনিধি অভিযোগ করেন, বেশ কয়েক বছর আগে রুমকি বগুড়া পৌরসভার নগর অংশীদারিত্বের মাধ্যমে দারিদ্র হ্রাসকরণ প্রকল্পের বাদুড়তলা কুলিপট্টি সিডিসির ক্যাশিয়ার ছিলেন। ওই সময় শুধু এলাকায় নয়; পৌরসভাতে গিয়েও মাদকসেবীদের কাছে ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদক বিক্রি করতো। গত ২০১৫ সালে পৌরসভার নির্বাচনে ভগ্নিপতি ‘তুফান বাহিনীর’ সহায়তায় ২ নম্বর সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর হয়। পৌরসভায় সেবা নিতে আসা জনগণের কাছে জোর করে টাকা আদায়সহ সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় তার ওপর সবাই ক্ষিপ্ত।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বগুড়া পৌরসভার ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে কোনও নাগরিক নিজের বাড়ি বানানো, সংস্কারসহ অন্যান্য কাজ করলেও রুমকিকে বাধ্যতামূলক চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে সে কোনও কাজ করতে দেয় না। পৌর এলাকায় বিলবোর্ড স্থাপনসহ যেকোনও কাজে তাকে চাঁদা দেওয়াটাও বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এলাকাবাসী বলেন, রুমকির কারণে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। সে গ্রেফতার হওয়ায় অনেকে মিষ্টি বিতরণ করেছেন।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) এক ছাত্রী ও তার মাকে নির্যাতন এবং মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকায় আলোচনায় আসেন কাউন্সিলর রুমকি। এ মামলায় রবিবার (৩০ জুলাই) রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয। পরে আদালত সোমবার (৩১ জুলাই) তাকে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। রুমকিকে আদালতে আনার পর পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার সময় আদালতে প্রচণ্ড ভিড় হয়। এসময় জনগণ তাকে লক্ষ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। 

/এআর/টিএন/