থানা ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সূত্রে জানা গেছে, চক জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের সরকারি পুকুর পাড়ে কয়েক যুগ ধরে বাস করে আসছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির ১৬ পরিবার। কিন্তু সরকারি এক একর ২২ শতকের ওই পুকুর নিলাম সূত্রে ভোগদখল করে আসছিলেন পার্শ্ববর্তী নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলার জগদীশপুর গ্রামের রোস্তম আলী ও মোশারফ হোসেনের বাবা আবুল কাশেম। আবুল কাশেম মারা যাওয়ার পর ওই পুকুর নিয়ে তার ছেলে রোস্তম আলীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে নৃ-গোষ্ঠির লোকজনের বিবাদ চলে আসছিল। এরই জের ধরে সোমবার রাত ৯টার দিকে কাশিনাথের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। ওই সময় কাশিনাথের পরিবার বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিল। এ ঘটনায় রোস্তম ও মোশারফসহ আট জনকে আসামি করে কাশিনাথ সিং মঙ্গলবার জয়পুরহাট সদর থানায় মামলা করেন।
কাশিনাথ সিং জানান,সরকারি খাস পুকুর নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে রোস্তম আলী ও মোশারফ হোসেনের সঙ্গে তিনিসহ ওই পুকুর পাড়ে বসবাসরতদের ঝগড়া বিবাদ চলে আসছিল। পুকুর পাড় থেকে তাদের উচ্ছেদ করতে রোস্তম ও মোশারফ পরিকল্পিতভাবে বাড়িতে আগুন দেয়। এতে তার প্রায় ১০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন,‘ওরা প্রভাবশালী হওয়ায় আদৌ নায্য বিচার পাবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কিত।’
সরকারি ওই খাস পুকুরের নিলাম সূত্রে মালিকানা দাবি করে নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার জগদিশপুর গ্রামের রোস্তম আলী মোবাইল ফোনে বলেন,‘পুকুরটি ১৯৬৭ সালে নিলাম সূত্রে আমার বাবা (মৃত কাশেম আলী) মালিকানা পান। বাবা মারা যাওয়ার পর এখন আমরা দখলভোগ করছি। তারা নিজেরা আগুন দিয়ে আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে আমরা কোনোভাবেই জড়িত না।’
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন জানান,এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নৃ-গোষ্ঠির লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২৭ অক্টোবর জমি নিয়ে মামলার জের ধরে জয়পুরহাট সদরের ঈশ্বরপুর গ্রামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি নগেন চন্দ্র পাহানের বাড়িতে আগুন দেয় প্রতিপক্ষরা। ওই ঘটনায় নগেন চন্দ্রের ছেলে গোবিন্দ চন্দ্র পাহান বাদী হয়ে জয়পুরহাট থানায় মামলা করলে পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করে। জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে জেলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির ওপর হামলা ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটছে জেলায় বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি পরিবারগুলোর মাঝে।