সেই রুমকি সাময়িক বরখাস্ত

নির্যাতিতা কিশোরী ও তার মাকে ন্যাড়া করার অভিযোগে গ্রেফতার কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকিবগুড়ায় ‘ধর্ষক’ ভগ্নিপতি তুফান সরকারকে বাঁচাতে মা’সহ এক কিশোরীকে ক্যাডার দিয়ে বাড়িতে তুলে এনে নির্যাতন ও দুজনের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া মামলার আসামি বগুড়া পৌরসভার ২ নম্বর সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব আবদুর রউফ মিয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।

বগুড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব আবদুর রউফ মিয়া ৮ মার্চ রুমকিকে সাময়িক বরখাস্তের চিঠিতে স্বাক্ষর করেন। ১৮ মার্চ তিনি চিঠিটি হাতে পেয়েছেন।  

তিনি আরও জানান, কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকি গ্রেফতার হওয়ার পরপরই অন্য এলাকার কাউন্সিলরকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তবে বগুড়ার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক সুফিয়া নাজিম জানান, মামলার চার্জশিট গৃহীত হওয়ার পরপরই মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট করা হয়েছে। তবে বুধবার দুপুর পর্যন্ত রুমকিকে বরখাস্তের অফিসিয়াল কোনও চিঠি তিনি হাতে পাননি।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব আবদুর রউফ মিয়া স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুর এলাকার জাহিদ হাসানের স্ত্রী ও বগুড়া পৌরসভার ২ নম্বর সংরক্ষিত আসনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকিসহ ১০ জন এবং অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় গত বছরের ২৯ জুলাই পেনাল কোডের বিভিন্ন ধারায় মামলা (নং-১৩০, জিআর-৮২৪/১৭) হয়। অভিযোগপত্র (নং-১০৮৭) অনুসারে প্রধান আসামি তুফান সরকার গত বছরের ১৭ জুলাই সকাল সাড়ে ৮টায় এক কিশোরীকে চকসূত্রাপুরের বাড়িতে তুলে এনে ধর্ষণ করে। ঘটনা জানাজানি হলে মারজিয়া হাসান রুমকির হুকুমে আসামিরা ২৮ জুলাই বেলা পৌনে ৩টার দিকে ওই কিশোরী ও তার মাকে অপহরণ করে রুমকির বাসায় নিয়ে আসে। রুমকি ও অন্যরা প্রথমে কাঁচি দিয়ে মা ও মেয়ের মাথার চুল কেটে দেয়। এরপর নাপিত এনে ন্যাড়া করে দেয়। মারপিট করে দু’জনকে জখম করে। প্রধান আসামি তুফান সরকার কিশোরীকে ধর্ষণ ও মা’সহ মেয়েকে অপহরণ করে রুমকির বাড়িতে নিয়ে আটকে রেখে মারধর, যৌনপীড়ন ও চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। মামলার তদন্ত শেষে প্রাথমিক সত্যতার ভিত্তিতে গত ৯ অক্টোবর দ্বিতীয় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল এবং ২০ ডিসেম্বর তা গৃহীত হয়। জেলা প্রশাসকের চিঠিতে জানা যায়, কাউন্সিলর রুমকি জেলে আছে। এ অবস্থায় স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯-এর ৩১ এর উপধারা (১) অনুসারে মারজিয়া হাসান রুমকিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।