বাঁশের চাটাইয়ে মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার!

মুক্তিযোদ্ধার কফিনে পতাকার পরিবর্তে চাটাইরাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন হয়েছে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল তাকে গার্ড অব অনারও দিয়েছে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার মরদেহের ওপর ছিল বাঁশের চাটাই; অথচ সেখানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা থাকার কথা!

শনিবার বিকালে (১৯ মে) পাবনার বেড়া উপজেলার পৌর এলাকার শহীদ আব্দুল খালেক স্টেডিয়ামে এ ঘটনা ঘটে। এখানে বাঁশের চাটাই দিয়ে গার্ড অব অনার দেওয়া হয় বেড়া উপজেলার পৌর সদরের সম্ভুপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা তাহেজ উদ্দিন সরকারকে।

স্থানীয়রা জানান, তাহেজ উদ্দিন সরকার শুক্রবার (১৮ মে) মারা যান। শনিবার (১৯ মে) তার দাফন সম্পন্ন হয়। দাফনের আগে তাহেজ উদ্দিন সরকারকে পতাকার পরিবর্তে বাঁশের চাটাই দিয়ে ঢেকে দিয়ে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এ সময় বেড়ার এসিল্যান্ড মাহবুব হাসানসহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারাও উপস্থিত ছিলেন। বাঁশের চাটাই দিয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেওয়া নিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে।

এ ব্যাপারে তাহেজ উদ্দিন সরকারের ছেলে মিলন হোসেন বলেন, ‘আমার বাবার ভারত এবং বাংলাদেশের দুটি সনদই আছে। বেড়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি ইসহাক আলী ইচ্ছাকৃতভাবে আমার বাবাকে বাঁশের চাটাই দিয়ে গার্ড অব অনার দিয়েছেন। ইসহাক আলী কেবল আমার বাবাকেই নয়, দেশের সব মুক্তিযোদ্ধাকে অমর্যাদা করেছেন। এই ঘটনার বিচার হওয়া প্রয়োজন।’

এ অভিযোগের বিষয়ে বেড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি ইসহাক আলী বলেন, ‘এটা তো সামান্য বিষয়, আপনাদের এত মাথাব্যথা কেন? একটা ভুল হয়েছে, তাই বলে এটা নিয়ে এতো মাতামাতি কেন!’

বেড়া উপজেলার এসিল্যান্ড মাহবুব হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গার্ড অব অনার দেওয়ার জন্য সব প্রস্তুতির দায়িত্ব থাকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডারের ওপর। আমরা শুধু ওখানে গিয়ে গার্ড অব অনার দিই। তাই কোনও দিকে খেয়াল না করে আমি ও পুলিশ বাহিনীসহ সবাই গার্ড অব অনার শেষে দেখতে পাই—গার্ড অব অনারের সময় মুক্তিযোদ্ধার কফিনের ওপর জাতীয় পতাকা নেই। তখন আমি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি ইসহাক আলীর কাছে কারণ জানতে চাই। তিনি জানান, তাড়াহুড়োয় তিনিও এ ব্যাপারটা খেয়াল করেননি। ভুল হয়ে গেছে, কি আর করার; বা কি করলে এই ভুল সংশোধন হবে।’