গত ১৮ মে শুক্রবার মুক্তিযোদ্ধা তাহেজ উদ্দিনের মৃত্যু হলে ১৯ মে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এই মুক্তিযোদ্ধার শেষযাত্রায় তাকে জাতীয় পতাকা দিয়ে যথাযথ সম্মান দেখানো হয়নি। তাকে বাঁশের চাটাই মুড়িয়ে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয়। এ সময় বেড়ার এসিল্যান্ড মাহবুব হাসান ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ সব পর্যায়ের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, গণমাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়।
প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মিলন হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বেড়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি ইসহাক আলী ইচ্ছাকৃত আমার বাবাকে পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়নি। আমি যখন উনাকে কয়েকবার ফোন করে বলি, সব প্রস্তুতি ঠিক আছে কিনা, তখন তিনি বলেন তোমাকে এই নিয়ে ভাবতে হবে না। এ ব্যাপারে আমি বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও বেশ কয়েকবার ফোন করি। তিনি বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতিকে বলেছি। পরে আমরাও আর খেয়াল করিনি। দাফন শেষে যখন সভাপতিকে বলি জাতীয় পতাকা কফিনের ওপর থাকলো না কেন, তখন তিনি বলেন, পতাকা বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে হয়। তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত তদন্ত বা বিচারের কোনও প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।’
এদিকে বেড়ার এসিল্যান্ড মাহবুব হাসান (নির্বাহী কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গার্ড অব অনার দেওয়ার জন্য সমস্ত কিছু প্রস্তুত করার দায়িত্ব থাকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডারের। আমরা শুধু গিয়ে ওখানে গার্ড অব অনার দেই। তাই কোনও দিকে খেয়াল না করে আমি এবং পুলিশ বাহিনীসহ সবাই গার্ড অব অনার শেষে দেখতে পাই, মুক্তিযোদ্ধার কফিনের ওপর বাংলাদেশের যে পতাকা থাকে সেটি নাই। তখন আমি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি ইসহাক আলীর কাছে কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, তাড়াহুড়োয় আমিও খেয়াল করি নাই। এখন ভুল হয়ে গেছে, কী আর করার।’
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. শফিউল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল ভেঙে দেওয়া হয়েছে, তাই এ ব্যাপারে আমরা প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, যেখান নির্বাহী কর্মকর্তা নেই সেখানে এসিল্যান্ডকে চিঠি দিয়েছে তাদের করণীয় সম্পর্কে। আর ওই দিনের ঘটনার জন্য এখন পর্যন্ত কোনও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি।’
আরও পড়ুন: বাঁশের চাটাইয়ে মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার!