মাগুরায় বিলুপ্ত হতে চলেছে প্রায় ২০ প্রজাতির মাছ

বিলুপ্ত প্রায় বাইলা মাছ

মাগুরায় প্রায় ২০ প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হতে চলেছে। এসব মাছ এখন আর বাজারে মিলছে না বলে জানান স্থানীয়রা। এ ব্যাপারে স্থানীয়দের অভিযোগ নদীতে বাঁধ দিয়ে পোনা মেরে ফেলা হচ্ছে। যে কারণে দেশি প্রজাতির এসব মাছ  প্রায় বিলুপ্ত। কিন্তু এ ব্যাপারে কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য বিষয়ক কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র দাস তাদের বিভিন্ন সীমদ্ধতার কথা জানান। 

তিনি বলেন, ‘নদী খাল বিলে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে এটা ঠিক। আমরা মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তা বন্ধ করছি কিন্তু আমরা ইচ্ছা করলেই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারি না এর জন্য প্রশাসনের সহযোগীতা লাগে, সঙ্গে শ্রমিক প্রয়োজন হয়। এগুলো যখন তখন ব্যবস্থা করাও কষ্টসাধ্য কাজ।’

জেলা মৎস্য বিভাগ এবং সচেতন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশি প্রায় ২০ প্রজাতির মাছ এখন বিলুপ্তির পথে। এর মধ্যে বাতাসি, রয়না, টেংরা, আইড়, বেলে, চিতল, ফলোই, গজার, কাজড়ি, চেলা, খোলসা, জিয়ল, মাগুও, স্বরপুটি, কয়া, টাটকিনি অন্যতম। এর মধ্যে পাবদা, টেংড়া, স্বরপুটি ও বেলেসহ কয়েক প্রজাতির মাছ বদ্ধ জলাভূমিতে চাষ করা হলেও দেশি প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মাগুরা শহরের কলেজ পাড়ার গৃহিনী মমতাজ বেগম বলেন,‘আজকাল বাজার থেকে দেশি প্রজাতির মাছ আসে না বললেই চলে। বিশেষ করে বাতাসি, চেলা, চিতল, রয়না, টাটকিনি, খোলসা মাছ এখন দেখিই না। এসব মাছের স্বাদ একবারেই ভিন্ন।

শহরের ইসলামপুর এলাকার ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম বলেন, পাবদা, টেংরা, স্বরপুটি, আইড় , জিয়ল ও মাগুড় মাছ বাজারে এখন পাওয়া যায়। কিন্ত এর সবই চাষের মাছ। এগুলো আমাদের দেশি মাছ না হওয়ায় এর স্বাদ একবারেই অন্য রকম।

পারনান্দুয়ালী এলাকার জেলে পরিতোষ বলেন,‘এখন আর নদীতে জাল ফেলে লাভ হয় না। নদীতে বাঁধ দিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে পোনা মাছ মেরে নেওয়া হচ্ছে কিন্তু দেখার কেউ নেই। এভাবে চললে দেশি মাছ বলে আর কিছুই থাকবে না।’

এ বিষয়ে জেলা মৎস্য বিষয়ক কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র দাস বলেন, ‘মাছ সংরক্ষণের জন্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে মাছের অভায়শ্রম তৈরি করেন। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে অর্থভাবের কারণে আর আমাদের পক্ষে অভায়শ্রম চালানো সম্ভব হয় না। ফলে অভায়শ্রমের প্রকৃত কার্যকারিতা আর থাকে না।’