বিদেশি ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে প্রভাষক কারাগারে

সিরাজগঞ্জবিদেশি ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে সিরাজগঞ্জের নর্থ বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. তুহিনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন কোর্ট পরিদর্শক মো. মোস্তফা কামাল।

ভুক্তভোগী ছাত্রী সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকালে থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ রাতে ডা. তুহিনকে আটক করে। রাতে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।  ওই ছাত্রীর বাড়ি নেপালে। তিনি চতুর্থ বর্ষে পড়েন।

সিরাজগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলী জাফর বলেন, ‘মেয়েটির সঙ্গে প্রণয়ঘটিত কোনও ঘটনার স্থির বা ভিডিও চিত্র একটি পেনড্রাইভে রাখা ছিল। সেটি ডা. তুহিনের কব্জায় ছিল। মেয়েটি সেটি উদ্ধারের জন্য বার বার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে সে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানায়। এমনকি, সহপাঠীরাও চেষ্টা করে। শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়ে মেয়েটি পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয়।’

সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডা. তুহিন নর্থবেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক। ভুক্তভোগী ছাত্রী বিদেশি (নেপালি) এবং চতুর্থ বর্ষে পড়েন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে চিকিৎসককে গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি সেনসেটিভ হওয়ায় তা গোপন রাখা হয়। এটি নিয়ে রাষ্ট্রদূত অফিসেও যোগাযোগ করা হয়।’

তবে, শিক্ষার্থীর দু-তিন জন নারী সহপাঠী জানান, লেখাপড়ার সুবাদে ছাত্রীটির সঙ্গে ডা. তুহিন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে বিয়ের কথা বলে তাকে যৌন নির্যাতন করেন। যৌন নির্যাতনের ঘটনা ভিডিওধারণ করে ব্লাকমেইল করা হয়। সম্প্রতি বিয়ের জন্য চাপ দিলে চিকিৎসক তুহিন অস্বীকার করেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার দুপুরে দু'জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর রবিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে আবারও ওই ছাত্রী ডা. তুহিনের বাড়ি গিয়ে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। তখনও তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি, এমনকি হাতাহাতিও হয়। সেদিন ওই ছাত্রী বিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষকে জানায় এবং সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করে। পরে ডা. তুহিনকে পুলিশ আটক করে।

নর্থ বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. এস.এম আকরাম হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর এ বিষয়ে মামলা হওয়ায় পুলিশ ইতোমধ্যে ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে।’

সদর থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) নুরুল ইসলাম গড়িমসি ও কালক্ষেপণের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাটি জানার পরপরই যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে।’