বোরকা পরে নারীর গায়ে আগুন দিয়েছিলেন প্রত্যাখ্যাত যুবক

 

01বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় এক নারীর গায়ে আগুন দিয়েছিলেন নাইম (২৩) নামে এক যুবক। আগুন দেওয়ার সময় নাইম বোরকা পরে থাকায় এ ঘটনায় কোনও ক্লু পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নাইমকে শনাক্ত করা হলে তিনি আগুন দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য জানিয়েছেন।

এক মেয়ে সন্তানের জননী ওই নারীকে আগুন দেওয়ার ঘটনায় শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে ধামরাই থানার আইনগঞ্জ এলাকায় নিজ বাসা থেকে নাইমকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি স্থানীয় একটি কলেজের সম্মান চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।

নাইম পিবিআইকে জানান, ওই নারীর সঙ্গে নাইমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে স্বামী-সন্তান রেখে ওই নারীকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন তিনি। কিন্তু ওই নারী এতে রাজি না হয়ে নাইমকে প্রথমে ফেসবুক থেকে ব্লক করে দেন। পরবর্তীতে ফোন ধরাও বন্ধ করে দেন তিনি। তখন নাইম জানতে পারেন, আরও কয়েকজন ছেলের সঙ্গে ওই নারীর সম্পর্ক রয়েছে। এই ক্ষোভ থেকে তিনি তার মুখে আগুন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

নাইমের বরাত দিয়ে রাজশাহী পিবিআইয়ের এসআই মহিদুল ইসলাম জানান, ওই নারীর স্বামী একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে তিনি ঢাকায় ছিলেন। তখন স্বামীর সঙ্গে ওই নারীও ঢাকায় থাকতেন এবং ইডেন কলেজে ডিগ্রিতে পড়াশোনা করতেন। তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ধামরাই কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র নাইমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তাদের মধ্যে কথাবার্তা চলতে থাকে। একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

জানা গেছে, গত ২৯ জানুয়ারি সকালে চার বছর বয়সী মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন ওই নারী। ওই সময় কেউ একজন বোরকা পরে এসে ওই ওই নারীর গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। দগ্ধ ওই নারীকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরের দিন (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। এরপর তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। তার অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় প্রথমে পুঠিয়া থানায় মামলা হয়। পরে পিবিআই-রাজশাহী মামলাটির তদন্ত শুরু করে।