পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদান, রাণীনগরে ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

Naogaon picture-1কক্ষ সংকটের কারণে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত পারইল উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে পরিত্যক্ত মাটির ভবনে। ফলে ঝুঁকিতে রয়েছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক ও অভিভাবকরা মনে করেন, যেকোনও সময় ঘটে যেতে বড় দুর্ঘটনা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সাত্তার জানিয়েছেন, ১৯৬৫ সালে এই অঞ্চলের তৎকালীন শিক্ষানুরাগী মরহুম মসলিম উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তির উদ্যোগে ৩টি মাটির কক্ষে শুরু হয় পাঠদান। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৭৩ সালে স্থাপন করা হয় পারইল উচ্চ বিদ্যালয়। অর্ধশতাধিক বছর ধরে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে আসছে এই বিদ্যাপীঠটি। কিন্তু এখনও এই বিদ্যাপীঠটিতে কোনও প্রকারের আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি।
বর্তমানে এই বিদ্যাপীঠ নানান সমস্যায় জর্জরিত। সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কক্ষ সংকট। কক্ষ সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত মাটির কক্ষের বারান্দায় গাদাগাদি করে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বিদ্যালয়ে প্রতিদিন ৩৫০ জন শিক্ষার্থী পাঠগ্রহণ করছে। বিজ্ঞানাগার না থাকার কারণে লাখ লাখ টাকা মূল্যের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার উপকরণ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রধান শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষকদের জন্য নেই আলাদা কক্ষ।
বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ঝর্না বেগমের ভাষ্য, ‘আমরা কক্ষের অভাবে পরিত্যক্ত মাটির ঘরে ও বারান্দায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠ গ্রহণ করছি। আমাদের এই বিদ্যালয়ে নতুন বিল্ডিং করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’ অপর আরেক শিক্ষার্থী আব্বাস হোসেনও বিদ্যালয়ে ভবন না থাকার কারণে লেখাপড়ার সমস্যা হওয়ার কথা বলেছে।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. জিল্লুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা অনেকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর এই সমস্যার কথা লিখিতভাবে জানিয়েছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও ফল পাওয়া যায়নি। যদি এই পরিত্যক্ত ভবনগুলো ভেঙে আধুনিক ভবন নির্মাণ করা হয়, তাহলে একটি সুন্দর পরিবেশে শিক্ষার্থীরা পাঠগ্রহণ করতে পারবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেছেন, ‘এই বিদ্যালয়সহ আরও কয়েকটি বিদ্যালয়ের সমস্যা চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হয়েছে। আশা করি, এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’