মহাসড়কের পাশে মিললো কলেজছাত্রের মুখ থেঁতলানো লাশ

সাব্বির রহমান শাওন (ছবি– প্রতিনিধি)বগুড়ার শাজাহানপুর থেকে সাব্বির রহমান শাওন (২০) নামে এক কলেজছাত্রের মুখ থেঁতলানো লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১২ আগস্ট) সকালে উপজেলার নয়মাইল এলাকায় বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কের পাশ থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের স্বজনেরা ঘটনাটিকে ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বলে দাবি করেছেন।

নিহত সাব্বির রহমান শাওন শহরের ঠনঠনিয়া সুফিপাড়ার হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে শাওন ছিলেন দ্বিতীয়। তিনি এ বছর বগুড়া সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন।

নিহতের স্বজনেরা জানান, রবিবার (১১ আগস্ট) বিকালে জুতা কেনার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন শাওন। রাতে বাড়ি না ফেরায় বাবা হাবিবুর রহমান তার মোবাইলে কল দিলে তা বন্ধ পান। শাওনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মিঠুকে ফোন দিলে তিনি জানান, শাওন তার সঙ্গেই আছে। এ সময় শাওন ওই ফোনে তার বাবাকে জানান, ১০ মিনিটের মধ্যে বাড়ি ফিরবে।

নিহতের বাবা হাবিবুর রহমান ও মা সেলিনা আকতার জানান, রাত ১টা পেরিয়ে গেলেও শাওন বাড়ি না ফেরায় উদ্বিগ্ন হয়ে তারা আবারও মিঠুর মোবাইলে কল দেন। তখন মিঠু জানায়, শাওনকে তিনি শহরের আলতাফ আলী মার্কেটে রেখে এসেছেন।

সেলিনা আকতার বলেন, ‘এরপর ছোট ছেলে সাকিব উর রহমান ও মিঠুকে সঙ্গে নিয়ে সম্ভাব্য সব স্থানে শাওনের খোঁজ করি। সদর থানা ও কৈগাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতেও তাকে পাওয়া যায়নি। আজ (সোমবার) সকালে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পুলিশের গাড়িতে মুখ থেঁতলানো একজনের লাশ দেখতে পায় আমার ছোট ছেলে সাকিব। এ সময় স্যান্ডেল দেখে লাশটি তার মেজ ভাই শাওনের বলে শনাক্ত করে। পুলিশ জানায়, নয়মাইল এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় শাওন মারা গেছে।’

নিহতের ছোট ভাই সাকিব বলেন, ‘শাওন শহরে গিয়েছিল, নয়মাইল এলাকায় যাওয়ার কোনও প্রশ্ন ওঠে না। আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আর এ হত্যাকে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালাতে লাশ মহাসড়কের পাশে ফেলে দেওয়া দেয়। সেখানে যানবাহন আমার ভাইয়ের লাশ পিষ্ট করে।’ এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করবেন বলেও জানান তিনি।

প্রতিবেশী চাচা আল-আমিন বলেন, ‘গতকাল (রবিবার) রাত ১২টার দিকে শাওনকে তার বন্ধু মিঠুর মোটরসাইকেলে দেখেছি। এ সময় তাদের সঙ্গে মুন্না নামে আরও একজন ছিল।’

শাজাহানপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ ও সদর থানার ইউডি অফিসার এস আই সোলায়মান জানান, তারা প্রথমে এটাকে দুর্ঘটনা ভেবেছিলেন। কিন্তু শহর থেকে ৯-১০ মাইল দূরে মহাসড়কের পাশে লাশ পড়ে থাকায় সন্দেহ হচ্ছে। এ কারণে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে ঘটনাটি হত্যা না দুর্ঘটনা নিশ্চিত হওয়া যাবে। পাশাপাশি এ ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে। পরিবার থেকে মামলা দিলে তা গ্রহণ করা হবে।