সোনামসজিদে থার্মোমিটার দিয়ে চলছে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা

Chapainawabganj-PHOTO-02.-03.02.20

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সোনামসজিদ স্থলবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার ছাড়াই চলছে পাসর্পোটধারী যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা। ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি নির্দেশনায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা থাকলেও থার্মোমিটার চলছে শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয়। প্রাথমিকভাবে মৌখিক পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন মেডিক্যাল টিমের চিকিৎসকরা।  যাত্রীদের অভিযোগ, তেমন কোনও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভাইরাস শনাক্ত করার মতো পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি না থাকায় এ অবস্থা। এক্ষেত্রে ঝুঁকির আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তারা।

সোমবার সরেজমিনস্থলবন্দরে গিয়ে দেখা গেছে, থার্মাল স্ক্যানার ও যন্ত্রপাতি না থাকায় ট্রাক ড্রাইভার ও যাত্রীরা পারাপার হচ্ছেন প্রায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই। স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে যাত্রীদের মূলত প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে মেডিক্যাল টিমের কার্যক্রম।

ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াইশো যাত্রী যাতায়াত করেন। পাশাপাশি প্রতিদিন আড়াইশো থেকে সাড়ে তিনশো ভারতীয় পণ্য বোঝাই ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করে।

কথা হয় ভারত থেকে আগত বাংলাদেশি যাত্রী গোলাপ, ইমরানসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে। তারা জানান, ভারতের ওপারে মোহদীপুর স্থলবন্দরে কোনও স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। এপারে এসে দেখি মূলত প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ মেডিক্যাল টিমের কার্যক্রম।

যাত্রীরা আরও জানান, ভাইরাসটি দিন দিন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে। তাই সঠিকভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হোক।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যথাযথ স্বাস্থ্য পরীক্ষা না হওয়ায় এই বন্দর ব্যবহারকারীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সোনামসজিদ সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, ‘স্থলবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার আওতায় আনা হচ্ছে না ভারত থেকে আসা পরিবহন চালক ও সহকারীদের। তাদেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষার আওতায় আনা হোক।’

স্থলবন্দরে দায়িত্বরত তিন সদস্য বিশিষ্ট মেডিক্যাল টিমের প্রধান ডা. রায়হান কবির বলেন, ‘ইমিগ্রেশন দিয়ে প্রবেশ করা নাগরিকদের গায়ে জ্বর জ্বর ভাব, শুকনো কাশি, গলাব্যাথা, চোখ লাল, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ করোনা ভাইরাসের কোনও উপসর্গ দেখা দিলে তাদেরকে হাসপাতালে নেওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ডা. রায়হান কবির আরও বলেন, ‘উপযুক্ত যন্ত্রপাতি ও থার্মাল স্ক্যানার না থাকায় কিছুটা ঝুঁকি থেকেই যায়। এছাড়া এই ভাইরাস মানুষের শরীরে থাকলে তা প্রকাশ পেতে ১৪ দিন সময় লাগে। তবে এ ভাইরাসের কোনও রোগী এখনও সোনামসজিদ স্থলবন্দর কিংবা বাংলাদেশে শনাক্ত হয়নি।’

জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, ‘বিশেষ সর্তকর্তা হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে একটি ‘আইসোলেশন ইউনিট’ চালু করা হয়েছে’। চালক ও সহকারীদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ যেহেতু এই বন্দর দিয়ে কোনও চীনা নাগরিক ভারতে যাতায়াত করে না সেহেতু চালক ও সহকারীরা কোনও ঝুঁকির মধ্যে নেই। তবে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ এ ব্যাপারে সর্তক রয়েছে।’