চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের কয়েকটি উপজেলায় বুধবার (৩ জুন) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জেলার শাহজাদপুর, কাজীপুর, উল্লাপাড়া, তাড়াশ, বেলকুচি, সদরসহ চলনবিল অঞ্চলে শত শত বিঘা পাকা বোরো ধান পানিতে তলিয়ে আছে। তলিয়ে যাওয়া ধান কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। ডুবো ধান কেটে ঘরে তুলতে অতিরিক্ত খরচে বিপাকে আছেন তারা।
সিরাজগঞ্জে এবার এক লাখ ৪১ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। ফসলি জমির বেশিরভাগই এখন সোনালি ধানে ভরা। আর মাত্র দুই-তিন দিন পরই গোলায় উঠতো এই ধান। করোনায় শ্রমিকের অভাবে তলিয়ে থাকা ধান কাটতে পারছেন না অনেকেই। কেউ কেউ ডুবে ডুবে ধান কাটছেন। ধান ঘরে তুলতে খরচ বাড়লেও স্থানীয় কৃষি দফতর থেকে কোনও খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকদের অনেকেই।
একই উপজেলার মাহিষলুটির আকবর আলী বলেন, 'চার একর জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। দুই একর জমির ধান পানি থেকেই কেটেছি। পানিতে পোকার সমস্যা থাকায় শ্রমিকরা ধান কাটতে চাচ্ছেন না। ৫শ' টাকার শ্রমিক এখন এক হাজার টাকাতেও পাওয়া যাচ্ছে না। সময় ও খরচ বাড়লেও স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে আমরা কোনও প্রণোদনা পাচ্ছি না।'
সদরের কাওয়াকোলার বয়রা গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, 'যমুনায় পানি বাড়ায় এলাকার নিচু জমি তলিয়ে গেছে। সবজি, পাট ও তিলের পাশাপাশি পাকা ধানও ডুবে গেছে।'
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. হাবিবুল হক বলেন, ‘এবার কারোনায় খাদ্য নিরাপত্তায় ধানের আবাদ বেশ গুরত্বপূর্ণ। ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও অতি বৃষ্টির কারণে নদ-নদী, খাল-বিলে পানি বাড়ায় কিছু জায়গায় ধান তলিয়ে গেছে। জেলার ৮৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। ৮-১০ দিনের মধ্যে বাকি ধান কাটা শেষ হবে। ডুবো ধান ঘরে তুলতে কৃষকদের অতিরিক্ত খরচ হবে। চলমান করোনায় প্রায় ৩ হাজার কৃষককে ৫ কেজি করে আমন ধানের বীজ প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হয়েছে। আগামীতে বেশকিছু কৃষকের সবজি খামার গড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। করোনায় স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি আমরাও মাঠে আছি।'