আটগ্রামের তৎকালীন জমিদার অনগ্রসর এই বিল এলাকার মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে স্থাপন করেন বিদ্যালয়টি। বিদ্যাপিঠটির এক পাশ দিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদী এবং আরেক পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট যমুনা। বিদ্যালয়টি মূলত ছোট যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। বর্তমানে নদী ও বিলে আবৃত ৫টি গ্রামের প্রায় দুইশ' শিক্ষার্থী এই বিদ্যাপিঠে পাঠ গ্রহণ করে। তবে আটগ্রামের মানুষের শিক্ষার উন্নয়ন ঘটলেও পিছু ছাড়েনি তাদের দুর্ভোগ। নদী ভাঙন সঙ্গে উন্নয়ন না হওয়ায় তারা এখনও পিছিয়ে রয়েছে।
এছাড়াও বিদ্যাপিঠটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। ঐতিহাসিক হলেও এখনও এখানে নির্মিত হয়নি শহীদ মিনার। এককথায় বলা যায়, আধুনিকতার ছোঁয়া এখনও স্পর্শ করেনি বিদ্যালয়টিকে। নদী ভাঙনের পর যে খেলার মাঠটি অবশিষ্ট রয়েছে সেটাও ব্যবহারের যোগ্য নয়। কক্ষ সংকটের কারণে ৬টি ভঙ্গুর শ্রেণিকক্ষের মধ্যে ৫টি কক্ষে গাদাগাদি করে পাঠ গ্রহণ করতে হয় শিক্ষার্থীদের। নেই একটি ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব। নেই সুরক্ষা প্রাচীর। প্রাচীর না থাকার কারণে যেকোনও সময় শিক্ষার্থীরা সবার অজান্তে নদীতে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক খেলার উপকরণগুলো থাকার কথা থাকলেও নেই এই বিদ্যাপিঠে। নিরানন্দ শিক্ষাগ্রহণ করতে হয় অবহেলিত এই অঞ্চলের শিশুদের। কিন্তু এই সব সমস্যাগুলো দূর করায় সুদৃষ্টি নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবতার আলো দেখতে পায় না।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, 'আমরা নদীর পাড়ে বনজ গাছ রোপণ করে ভাঙন রোধের চেষ্টা করেও রক্ষা করতে পারছি না।' নানা সমস্যায় বিদ্যালয়টি জর্জড়িত হলেও এখন এটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য জরুরিভাবে উত্তর ও পূর্ব পাশ দিয়ে স্থায়ীভাবে নদীর তীরে প্যালাসাইট, গাইড ওয়াল ও ব্লক দিয়ে সুরক্ষা প্রাচীর দিতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি। তা না হলে ভাঙনে বিদ্যালয়টি যেকোনও সময় নদীতে বিলিন হয়ে যাবে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খান বলেন, ‘এই বিদ্যালয়ের সার্বিক অবস্থার ওপর একটি প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদনটি অনুমোদন পেয়ে অর্থ বরাদ্দ দিলেই বিদ্যাপিঠটিকে স্থায়ীভাবে রক্ষা করার কাজ শুরু করা হবে।’