বেগুনের গুণে ভাগ্য বদল

 

নিজ চাষ করা বেগুন হাতে জিল্লুর রহমান শান্তি জোমাদ্দার

জিল্লুর রহমান শান্তি জোমাদ্দারের বাড়ি পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার পত্তাশী ইউনিয়নের পত্তাশী গ্রামে। তিনি প্রথম দুই বিঘা জমিতে কলা চাষ শুরু করেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বুলবুল, আম্ফানের তান্ডবে  সেই স্বপ্ন ভেঙে যায়। এক পর্যায়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। এরপর ৭০ শত জমিতে শুরু করেন ভাঙ্গর জাতের বেগুন চাষ। ৮ শ’ বেগুন চারা লাগান সে জমিতে। এতে খরচ হয় প্রায় ১ লাখ টাকা। এখন জিল্লুর রহমানের আশা সেই বেগুন বিক্রি করে ৪ লাখ টাকার বেশি আয় হবে।

আলাপকালে জিল্লুর রহমান বলেন, প্রথম কলা চাষ শুরু করি দুই বিঘা জমিতে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বুলবুল, আম্পানের তান্ডবে তা শেষ হয়ে যায়। স্বপ্ন মিশে যায় মাটিতে। এরপর ইন্দুরকানী উপজেলা কৃষি অফিসের উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ইব্রাহীম সরদারের কাছে গেলে তিনি আমাকে বেগুন চাষের পরামর্শ দেন।

এরপর চাষি জিল্লুর রহমান গোপালগঞ্জ-খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা-পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইন্সটিটিউট খুলনা প্রকল্প থেকে সার ও বিজ কেনা বাবদ ১ হাজার ৭০০ টাকা বরাদ্দ পান। যা পেতে উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা তাকে সহায়তা করেন। এ টাকা দিয়ে তিনি শুরু করেন ভাঙ্গর জাতের বেগুন চাষ। মাত্র ৭০ শতাংশ জমিতে চারা লগান ৮ শ’। বেগুন ক্ষেতে এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান তিনি। তার চার গুণ লাভের স্বপ্ন দেখছেন এখন।

জিল্লুর রহমান শান্তি জোমাদ্দারের চাষ করা বেগুন জিল্লুর রহমান বলেন, মনডায় এখন আনন্দ ধরে না। প্রতি সপ্তাহে ক্ষেত থেকে ১০-১২ মন বেগুন তুলছি। বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২০ থেকে ২৪ হাজার টাকায়। খরচ বাদ দিয়ে থাকে ১৬-২০ হাজার টাকার মতো। জৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত ক্ষেত থেকে বেগুন তুলতে পারবো। এখন আর তেমন খরচ নাই, শধু আয়ের পালা। আশাকরি ৪ লাখ টাকার বেশি আয় হবে।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইব্রাহীম সরদার বলেন, সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে প্রতি শতকে ২শ’ কেজি বেগুন উৎপাদন করা সম্ভব। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চাষি জিল্লুর রহমান শান্তি জোমাদ্দার ৭০ শতক জমির বেগুনের ক্ষেত থেকে ১৪ মেট্রিক টন বেগুন পাবেন। যা বিক্রি করে ৫ থেকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা আয় হবে তার।

জিল্লুর রহমান শান্তি জোমাদ্দার বলেন, বেগুন চাষের ক্ষেত্রে ইন্দুরকানী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়রা সিদ্দিকা আমাকে বিভিন্ন সময় অনেক পরামর্শ দিয়েছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়রা সিদ্দিকা বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার আঘাতের পর আমরা খাদ্য ও পুষ্টির অভাব পূরণে কাজ করছি। সরকারিভাবে অনেক রকমের প্রণোদনা দিচ্ছি। চাষিদের সার, বিজ, চারাসহ আর্থিক সহযোগিতা করছে সরকার।