ভাইয়ের ডিপিএসের টাকা আত্মসাতের জন্য মিথ্যা মামলা!

ছিনতাইয়ের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। অথচ নূরে হাবিব ডুজন (৩৮) নামের এক ব্যক্তি থানায় গিয়ে অভিযোগ করলেন, তার ছয় লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে। তিনি মামলাও করলেন। তবে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এলো নূরে হাবিব মিথ্যা বলেছেন। পুলিশ রহস্য উন্মোচন করেছে যে তার মামলা মিথ্যা।

নূরে হাবিব নগরীর ভদ্রা জামালপুর এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম মৃত হাবিব উদ্দিন। সোমবার (১১ জানুয়ারি) বিকালে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন, ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় তার টাকা ছিনতাই হয়েছে। বোয়ালিয়া থানা থেকে সামান্য দূরেই মোটরসাইকেলে আসা দুই যুবক তার টাকার ব্যাগ নিয়ে গেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। ঘটনার সময় তিনিও শপিং ব্যাগে টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলে চড়ে যাচ্ছিলেন বলে দাবি করেন।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, মামলা দায়েরের পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। নূরে হাবিব মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, ঘটনার দিন তিনি প্রিমিয়ার ব্যাংকের রাজশাহী নগরীর আলুপট্টি শাখা থেকে টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পুলিশ ব্যাংকটির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে নূরে হাবিবকে পায়নি। এমনকি ব্যাংক থেকে কোনও টাকা তোলা হয়নি বলে কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানায়।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, নূরে হাবিবের ব্যাংক হিসাবে আছে মাত্র ৮৩ টাকা। এতেই প্রমাণিত হয় যে নূরে হাবিবের কথা মিথ্যা। এরপর নূরে হাবিবকে থানায় দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে তিনি পুলিশের কাছে স্বীকার করেন যে ছিনতাইয়ের কোনও ঘটনা ঘটেনি। তিনি লিখিতভাবে পুলিশকে জানান, তার বড় ভাই রওশন আলী আমেরিকা প্রবাসী। তার ডিপিএস থেকে তিনি ছয় লাখ টাকা তুলে খরচ করে ফেলেছেন। প্রিমিয়ার ব্যাংকের ঢাকার শ্যামলী শাখায় তার ডিপিএস ছিল। সে ডিপিএস থেকে বিভিন্ন সময় টাকা তোলার কারণে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ছয় লাখ টাকা কেটে নিয়েছে। নূরে হাবিব তার ভাইয়ের টাকা তাকে না জানিয়ে খরচ করে ফেলায় ছিনতাই নাটক সাজান।

আরএমপির মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস আরও জানান, আদালতে মিথ্যা এই মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করায় বাদীর বিরুদ্ধেই পেনাল কোড-১৮২ ধারায় প্রতিবেদন দাখিল করা হচ্ছে।