নওগাঁয় উপেক্ষিত কঠোর বিধিনিষেধ!

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে নওগাঁ পৌরসভা এলাকা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় সর্বাত্মক লকডাউন চলছে। রবিবার (৬ জুন) এই দুই এলাকায় ১৫ বিধিনিষেধ আরোপের চতুুুুর্থ দিন পার হচ্ছে। এদিন লকডাউনের আগের তিন দিনের তুলনায় রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল বেড়েছে। তবে অনেকের মুখে নেই মাস্ক। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে একে অপরের গা ঘেঁষে চলাচল করছে। রাস্তার ধারে এবং বিভিন্ন পাড়ায় অনেক দোকান খোলা রাখতেও দেখা গেছে।

পুলিশ ও প্রশাসনের তৎপরতার কারণে নওগাঁ পৌর শহরের প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহন ও মানুষের চলাচল কম দেখা গেলেও পাড়া-মহল্লার রাস্তায় স্থানীয়দের অবাধে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে।

শহরের বিভিন্ন এলাকা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় এসব দৃশ্য দেখা যায়। সকালে নওগাঁ শহরের বাঙ্গাবাড়িয়া, ডিগ্রি কলেজের মোড়, তাড়ের মোড়, ডাবপট্টি ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন ও মানুষের চলাচল বেড়েছে। এসব মহল্লার অধিকাংশ দোকানপাট খোলা থাকতেও দেখা গেছে।

একই অবস্থা নিয়ামতপুর উপজেলার টিএলবি বাজার, নীমদিঘী, রামকুড়া মোড় গিয়ে
দেখা গেছে, অনেকটা স্বাভাবিক দিনের মতো অবস্থা।

এদিকে কয়েকদিন ধরে জেলায় করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা নিম্নমুখী লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে এখনও করোনা সংক্রমণের হার উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ বলেন, মানুষ সচেতন না হলে লকডাউন কিংবা বিধিনিষেধ যতই আরোপ করা হোক না কেন, তা কাজে আসবে না। মানুষের এমন উদাসীনতার কারণে আমাদের সবাইকে মূল্য দিতে হবে। বিধিনিষেধ আরোপের ফলে সাময়িক একটু কষ্ট হলেও জীবন রক্ষা হবে, এই বোধ থেকে আমাদের সবাইকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত।

তিনি আরও বলেন, নওগাঁয় প্রথম করোনা শনাক্ত হয় গত বছরের ১৩ মে। রবিবার পর্যন্ত দুই হাজার ৩৮৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি। যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই কেবল এই সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হতে পারে।

তিনি বলেন, নওগাঁর কোনও হাসপাতালে আইসিইউ নেই। জেলার করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নওগাঁ সদর আধুনিক হাসপাতালের করোনা ইউনিটসহ সরকারি-বেসরকারি কোনও হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) নেই।

নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদ বলেন, আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। নিয়মিত আমরা মাঠে রয়েছি। লকডাউনের পাশাপাশি বাজারে যেন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি না হয় সেই জন্য বাজার মনিটরিংও করছি। তবে অধিকাংশ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। অনেকেই মাস্ক ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন। সামাজিক দূরত্ব মানার বিষয়েও অনেকেই উদাসীন। কেউ-কেউ প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দোকান খোলা রাখছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে বুঝিয়ে লকডাউন সফল করার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।