স্ত্রীকে হত্যার ১৪ বছর পর স্বামীর ফাঁসির আদেশ

বগুড়ার কাহালুতে যৌতুকের জন্য স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামী আবদুর রাজ্জাকের (৪৯) মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এ মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে সতীন মনোয়ারা বেগমকে। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে বগুড়ার দ্বিতীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবির এ রায় ঘোষণা করেন। তবে আসামি আবদুর রাজ্জাক পলাতক রয়েছেন। গ্রেফতারের পর উচ্চ আদালতের অনুমোদন সাপেক্ষে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

বগুড়ার দ্বিতীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি আশেকুর রহমান সুজন ও আদালত সূত্র জানায়, আবদুর রাজ্জাক যৌতুকের ৪০ হাজার টাকা জন্য প্রথম স্ত্রী এলেমা বিবিকে প্রায় নির্যাতন করতেন। এ নিয়ে বিরোধের জেরে ২০০৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর সকাল ৭টা থেকে ১০টার মধ্যে নির্যাতনের পর এলেমা বিবিকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর আবদুর রাজ্জাক প্রচার করেন, তার বড় স্ত্রী এলেমা বিবি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এতে এলেমা বিবির বাবা ইয়াসিন আলী কাহালু থানায় অপমৃত্যু মামলা করেন। লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যার কথা উল্লেখ করা হয়।

এরপর ২০০৮ সালের ১২ মার্চ নিহতের ভাই হাফিজার রহমান আদালতে ভগ্নীপতি আবদুর রাজ্জাক, বোনের সতীন মনোয়ারা বেগমসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে কাহালু থানা হত্যা মামলা রেকর্ড করে। পুলিশ দুই আসামিকে গ্রেফতার করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাহালু থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু তাহের ওই বছরের ১৩ জুলাই আদালতে আবদুর রাজ্জাক ও মনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন। পরবর্তী সময়ে জামিনে ছাড়া পেয়ে দুইজন আত্মগোপন করেন। আদালত দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে প্রায় ১৪ বছর পর বৃহস্পতিবার দুপুরে আবদুর রাজ্জাককে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সতীন মনোয়ারা বেগমকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট শান্তা দেব ও রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাডভোকেট তাজ মোহাম্মদ মামলা পরিচালনা করেন।