আছে জেব্রা ক্রসিং, নেই পারাপারের পথ

রাজশাহী নগরীতে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অস্থায়ী ভবনের সামনে জেব্রা ক্রসিং থাকলেও পারাপারের পথ নেই। জেব্রা ক্রসিং পেরিয়ে রাস্তার মাঝখানের ব্যারিকেড দিয়ে লাফিয়ে পার হন পথচারীরা। নগরীর জনগুরুত্বপূর্ণ ভদ্রা-রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যবর্তী এই চার লেনের সড়কে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে আলোচনা-সমালোচনা। পথচারীরা বলছেন, জেব্রা ক্রসিং থাকা সত্ত্বেও ব্যারিকেড দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন সিটি করপোরেশনের লোকজন। 

স্থানীয় একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, জেব্রা ক্রসিং থাকলেও সেভাবে মানা হয় না। অনেক গাড়িচালক ও যাত্রীদের এটি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নেই। এখানে জেব্রা ক্রসিং থাকলেও রাস্তার মাঝে ব্যারিকেড। পারাপারের সুযোগ নেই। এদিকে নজর দেওয়া দরকার কর্তৃপক্ষের।

নগরীর শিরোইল বাসস্ট্যান্ডের সামনে জেব্রা ক্রসিং থাকলেও অর্ধেক চিহ্ন মুছে গেছে। পারাপারে আইল্যান্ডের ওপর ফাঁকা জায়গাও ছিল। কিন্তু নতুন করে কাজ শুরু করায় সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

জেব্রা ক্রসিং পেরিয়ে রাস্তার মাঝখানের ব্যারিকেড লাফিয়ে পার হন পথচারীরা

পথচারী রাবেয়া বেগম বলেন, আমরা ওতোটা শিক্ষিত মানুষ নই। এই রাস্তা দিয়ে ১০-১২ বছর ধরে চলাচল করি। দীর্ঘদিন ধরে এখানে এই চিহ্নগুলো আছে। মানুষকে দেখে শিখেছি যে, এমন চিহ্ন দিয়ে রাস্তা পার হতে হয়। এখন রাস্তার মাঝখানে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। গাড়িচালকরা থামে না। তাই যেদিক দিয়ে পারি রাস্তা পার হই।

শনিবার (০৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এখানে দায়িত্বরত আরএমপির ট্রাফিক পুলিশ গোলাম মোহাম্মদ বলেন, গাড়িচালক ও যাত্রীদের এই চিহ্নগুলো ব্যবহারে যেমন সচেতনতার প্রয়োজন তেমনটি আসলে নেই। অনেক সময় দেখা যায় যাত্রী জেব্রা ক্রসিং চিহ্নের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন। বারবার হাত দেখাচ্ছেন। কিন্তু চালক গাড়ির গতি কমাচ্ছেন না। এ জন্য যাত্রী সুবিধামতো যেকোনও দিক দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন। এখানে জেব্রা ক্রসিং আছে। রাস্তা পারাপারেরও জায়গা ছিল। কিন্তু নতুন করে আইল্যান্ডের কাজ করার সময় ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশন ভালো বলতে পারবে। তাদের এই বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত। নগরীর শিরোইল বাসস্ট্যান্ডের মোড়ে চারদিকে জেব্রা ক্রসিং দেওয়া উচিত। তাহলে আমাদের ডিউটি করতে সুবিধা হয়।

শিরোইল বাসস্ট্যান্ডের সামনে জেব্রা ক্রসিং থাকলেও অর্ধেক চিহ্ন মুছে গেছে

এসব বিষয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নূর ইসলাম বলেন, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ভবনের সামনে জেব্রা ক্রসিংটা কে করেছে? এটা কী সিটি করপোরেশন করেছে? আমিও বিকালে ঘুরে দেখে এলাম। সেখানে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা ছিলেন তাদের জিজ্ঞাসা করলাম। তারাও বলতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের কাছে আমরা চিঠি দেবো, কে করলো জেব্রা ক্রসিং, তা জানতে চাইবো।

তিনি আরও বলেন, জেব্রা ক্রসিং আমরা করি না। তবে স্বাভাবিকভাবে জেব্রা ক্রসিংয়ের ছয় ইঞ্চি-ছয় ইঞ্চি করে দাগগুলো করা হয়। এখানে অনেক মোটা করে করা হয়েছে। ইচ্ছামতো চওড়া করা হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে এটা কোনও আর্টশিল্পী করেছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলে আমরা ঠিকাদারকে বলে জেব্রা ক্রসিং করে দিতাম। তারপরও বাকি কাজ যখন শুরু হবে, তখন সেসময় এটি ঠিক করে দেওয়া হবে।

তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আরও বলেন, এখন বিভিন্ন রাস্তার কাজ চলছে। যার কারণে কিছু জায়গায় যাত্রীদের প্রয়োজন থাকলেও হয়তো সে জায়গায় জেব্রা ক্রসিং নেই। তবে কাজ শেষ হলেই বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সামনেসহ প্রয়োজন অনুযায়ী জেব্রা ক্রসিং করে দেওয়া হবে।