বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের শাহাদাৎবার্ষিকী আজ

বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের ৫০তম শাহাদাৎবার্ষিকী আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন তিনি। চাপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে ৭ নম্বর সেক্টরের প্রথম কমান্ডার মেজর নাজমুল হকের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে রেহাইচরে পতাকা উত্তোলন, স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান এবং দোয়া-মোনাজাত করা হয়।

এ সময় পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফেরদোসী ইসলাম জেসি, জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান ও পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমান। এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন সংগঠন ও সরকারি বিভিন্ন দফতরের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এছাড়া সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে তার সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও কবর জিয়ারত করে জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। 

ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহিমগঞ্জ গ্রামের আব্দুল মোতালেব হাওলাদারের ছেলে মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ত্যাগ করে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা অতিক্রম করে ভারতের মালদহ জেলার মোহদিপুরে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধে ৭ নম্বর সেক্টরের অধীন চাঁপাইনবাবগঞ্জে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরকে শত্রুমুক্ত করতে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বারঘরিয়া মহানন্দা নদী পাড়ে এসে উপস্থিত হন। ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর তার বাহিনীকে নিয়ে তিন ভাগে ভাগ হয়ে শহরের ঢোকার পরিকল্পনা করেন। ১৪ ডিসেম্বর ভোরেরা একটি ছোট নৌকা নিয়ে মহনন্দা নদী পার হয়ে এসে রেহাইচর গ্রাম থেকে শত্রুদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করতে করতে সামনে এগোতে থাকেন। 

ভোরে শত্রুদের শেষ বাংকারে চার্জ করার সময় পার্শ্ববর্তী একটি জানালা থেকে রাজাকার বাহিনীর নিক্ষিপ্ত একটি বুলেট ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের কপালে বিদ্ধ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন তিনি। পরের দিন ১৫ ডিসেম্বর লাশ উদ্ধার করে ঐতিহাসিক সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে সমাহিত করা হয়। সেই দিন বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের লাশ উদ্ধার করতে গিয়ে ইয়াকুব নামের এক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।