পুত্রবধূর পর শাশুড়ির বিষপান, দেখে শ্বশুর গেলেন ফাঁস দিতে

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের শ্রীপুর রামনগর গ্রামে পারিবারিক বিষয় নিয়ে একই পরিবারের তিন জন আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। শুক্রবার (১০ জুন) রাতে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটে। তবে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

জানা গেছে, পারিবারিক বিষয় নিয়ে শুক্রবার (১০ জুন) সকাল থেকে শাশুড়ি ও পুত্রবধূর ঝগড়া চলছিল। ঝগড়া শেষ হয় রাত ১০টার দিকে। এরপর অভিমান করে পুত্রবধূ সুমি খাতুন (২২) বিষপান করেন। কিছুক্ষণ পর শাশুড়ি কাজলী বেগমও (৪২) বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। প্রতিবেশীরা তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এই কাণ্ড দেখে শ্বশুর মোসলেম আলীও (৪৫) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। তবে লোকজনের বাধায় তিনি রক্ষা পান। তাকেও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আরও জানা গেছে, বাগমারা উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের শ্রীপুর রামনগর গ্রামের কলেজশিক্ষার্থী কাফি হোসেন পার্শ্ববর্তী কুতুবপুর গ্রামের সুমি খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে কাফি হোসেন মা-বাবার সঙ্গে নিজেদের বাড়িতে থাকছেন। পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শাশুড়ি ও পুত্রবধূর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হয়। শুক্রবার সকালে উভয়ের মধ্যে আবারও ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে রাত ১০টার দিকে অভিমান করে সুমি বিষপান করেন। সুমিকে অসুস্থ অবস্থায় তার স্বামী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সবাই সুমিকে নিয়ে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় শাশুড়ি কাজলী বেগমও বিষপান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রতিবেশীরা তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ ঘটনা জানার পর শ্বশুর মোসলেম আলী বাড়ির পাশের একটি আমগাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বাগমারা থানার এসআই রফিকুল ইসলাম জানান, শাশুড়ি ও পুত্রবধূকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বউ তার নিজের বাবা-মায়ের ফিরে গেছেন। আর শাশুড়ি তার বাড়ি গেছেন। এ বিষয়ে কোনও পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়নি।

পরিবারের সদস্যদের এই বিষয়ে জানতে চাইলে কেউ কোনও মন্তব্য করেনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বজনরা বলেন, কাফি ও সুমির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায়। কিন্তু দাম্পত্য জীবনে তারা সুখী নন। এ জন্য উভয়ের মধ্যে মনোমালিন্য পরিবারের সদস্যের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। ফসলে দেওয়ার জন্য বিষ বাড়িতেই রাখা ছিল। সেটি পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান।

বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম জানান, শাশুড়ি ও পুত্রবধূর পাকস্থলী ওয়াশ করা হয়েছে। বর্তমানে তারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। শ্বশুরের জটিল কোনও সমস্যা না থাকায় ভর্তি করানো হয়নি।