ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ক্রমেই জমে উঠছে রাজশাহীর বিভিন্ন পশুর হাট। নগরীর সিটি হাটে এবার পশুর আমদানি ভালো হলেও, বেচাবিক্রি কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন এখনও ঈদের কয়েকদিন বাকি আছে। তাই শেষ সময়ে ক্রেতারা পছন্দের পশু কিনে নেবেন, এতে দেরি হলেও বিক্রি ভালো হবে বলে আশা বিক্রেতাদের। তবে ঈদের আগপর্যন্ত প্রতিদিনই হাটে পশু বেচাকেনা হবে। তবে এবার হাটে ক্রেতাদের নজর মাঝারি পশুর দিকেই বেশি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হাঁক-ডাকে জমে উঠেছে হাট প্রাঙ্গণ। ক্রেতাদের নজর মাঝারি পশুর দিকে। হাটে কোরবানিযোগ্য পশুর প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। তবে অন্য বছরগুলোর চেয়ে ক্রেতা কম বলে মনে করছেন বিক্রেতারা। তারা বলছেন, গতবছরের তুলনায় ভালো দামে গরু-মহিষ বিক্রির প্রত্যাশা রয়েছে। তবে ক্রেতা কম। দামও বলছে কম। সামনের দিনগুলোতে ক্রেতা সমাগম বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন বিক্রেতারা।
রাজশাহীর তানোরের কৃষ্ণপুরের বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন পাঁচটি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন। তিনি গ্রাম থেকে গরু কিনে হাটে বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন। তার চার মণের গরুর দাম ক্রেতারা বলছেন ৯০ হাজার এবং পাঁচ মণের গরুর দাম বলছেন এক লাখ ১০ হাজার টাকা। ব্যবসায়ী বলেন, তার কেনা দামের চেয়ে ১০-১৫ হাজার টাকা কম দাম হাঁকছেন ক্রেতা।
আশরাফ হোসেন নামের এক খামারি গরু বিক্রি করতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে এইবার গরু প্রতি দাম বেশি। কিন্তু গরুর উৎপাদন খরচ বিবেচনায় তেমন বেশি না।
রাজশাহী সিটি হাট পরিচালনা কমিটির সদস্য ফারুক হোসেন ডাবলু বলেন, হাটে পশুর আমদানি ভালো আছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বড় বড় ব্যবসায়ীরা আসছেন। করোনার কারণে গতবার বাইরে থেকে ব্যাপারীরা সেভাবে আসতে পারেননি। এবার সবাই আসতে পারছে। স্থানীয় পর্যায়ের ক্রেতাসহ বাইরের ক্রেতারাও পশু কিনছেন।
রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় এবার কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ২৭ লাখ ২৮ হাজার ৪৬০টি। জেলায় কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত রয়েছে তিন লাখ ৯২ হাজার ৮৫২টি। ১৬ হাজার ৭৯ জন খামারির কাছে আছে এক লাখ ২১ হাজার ৩৭২টি গরু, দুই লাখ ৩৩ হাজার ২৩৫টি ছাগল, ৩৮ হাজার ২৪৫ টি ভেড়া ও তিন হাজার ২১১টি মহিষ। জেলায় এবার কোরবানির পশুর সম্ভাব্য চাহিদা তিন লাখ ৮২ হাজার ১১৮টি। চাহিদার চেয়ে প্রায় ১০ হাজার পশু বেশি আছে রাজশাহীর ৯ উপজেলায়।
জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, রাজশাহীতে পশুর যোগান বেশি থাকায় এবার ঈদ বাজার খামারি ও ক্রেতা উভয়ের অনুকূলে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর রবিবারের (৩ এপ্রিল) হাট পর্যবেক্ষণে এটা বলা যায়, পশুর সরবরাহ বেশি, ক্রেতারাও আছেন। ক্রেতারা বাজার বোঝার চেষ্টা করছেন। ঈদের দুই দিন আগে থেকে কেনা-বেচা জমে উঠবে। আর যেহেতু পশু উদ্বৃত্ত আছে, কিছু পশু অবিক্রিতও থাকতে পারে।