প্রণোদনার সার বিক্রির মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নে প্রণোদনার সরকারি সার বিক্রির ঘটনায় গ্রেফতার চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। 

রবিবার (১৭ জুলাই) রাজশাহীর আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া সার বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকায় ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম ও সার ব্যবসায়ী রুহুল আমিনকেও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

জানা গেছে, ঝিকরা ইউনিয়নের প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিতরণের জন্য উত্তোলনকৃত প্রণোদনার সার বিতরণ না করে বিক্রির জন্য মজুদ করেন চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। খবর পেয়ে গত ২৭ মে অভিযান চালিয়ে সেগুলো উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা ইমতিয়াজ দেওয়ান বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে বাগমারা থানায় একটি মামলা করেন। 

এদিকে সরকারি সার বিক্রির ঘটনায় করা মামলায় হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন নিয়েছিলেন চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। এছাড়া ওই মামলায় এজাহারনামীয় আসামি ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম ও সার ব্যবসায়ী রুহুল আমিন পলাতক ছিলেন।

অন্যদিকে আমজাদ হোসেন নামে আরেক ব্যবসায়ীকে সার বিক্রির সময় হাতেনাতে আটক করে পুলিশ। তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। গোপনে বিক্রি করা ওইসব সার জব্দ করে দোকান সিলগালা করে রেখেছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আদালতের নির্দেশে জব্দকৃত সার গত ৭ জুলাই ঝিকরা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

প্রণোদনার সার বিক্রির ঘটনায় প্রধান আসামি করা হয়েছিল চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে। সেই সঙ্গে আরও তিন জনের নাম উল্লেখসহ ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত দেখানো হয়।

জানা গেছে, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, পাট অধিদফতরের পক্ষ থেকে উপজেলার ২ হাজার ৪৬০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে পাটবীজ বিতরণ করা হয়েছে। উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাট চাষবিষয়ক প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় কৃষকদের। ঝিকরা ইউনিয়নে ২৫০ জন কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়েছিল পাটবীজ। তাদের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইউরিয়া, ডিএপি ও এমওপি সার বিনামূল্যে প্রদানের জন্য সারগুলো প্রদান করা হয়। প্রণোদনার সেই সার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের জোগসাজশে বিক্রয় করা হয়েছিল।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাগমারা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) তৌহিদুর রহমান জানান, প্রণোদনার সরকারি সার বিক্রয়ের ঘটনায় করা মামলায় আগাম জামিন নিয়েছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান। আদালতে হাজির হয়ে আবারও জামিন আবেদন করলে আদালত নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আদালতের নির্দেশে এরই মধ্যে ওই সকল সার কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।