স্ত্রীকে হত্যার ১৬ বছর পর স্বামীর মৃত্যুদণ্ড 

বগুড়া সদরে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রী আলো বেগমকে হত্যার দায়ে স্বামী উজ্জ্বল প্রামাণিককে (৪০) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঘটনার দীর্ঘ ১৬ বছর পর রবিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে বগুড়ার প্রথম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচার একেএম ফজলুল হক এ রায় ঘোষণা করেন। তবে ঘটনার পর থেকে পলাতক উজ্জ্বলকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি একলাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গ্রেফতারের পর উচ্চ আদালতের অনুমোদন সাপেক্ষে তার সাজা কার্যকর হবে। এছাড়া আদালত চার আসমিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

খালাস পাওয়া চারজন হলেন- মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত উজ্জ্বলের মা আলেয়া বেওয়া, ভাই হিরা প্রামাণিক, আত্মীয় কাহালু উপজেলার আলোকছত্র গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে নাজমুল হোসেন লাবু ও তার স্ত্রী লাভলী বেগম।

আদালত সূত্র জানায়, উজ্জ্বল প্রামাণিক বগুড়া সদর উপজেলার কৈচড় দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। তিনি গত ২০০৬ সালের জুনে বগুড়া শহরের সুত্রাপুর এলাকার আকবর আলী শেখের মেয়ে আলো বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের সময় ৩০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হয়। উজ্জ্বল দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ি থেকে আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। অন্যথায় স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার হুমকি দেন। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সালিশ-দরবারেও বিষয়টির সমাধান হয়নি। আলো বেগমের পরিবার আর কোনও যৌতুক দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়।

বিয়ের দুই মাসের মাথায় ওই বছরের ১ আগস্ট বিকাল ৪টার দিকে পুলিশ শয়নঘর থেকে আলো বেগমের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। ১৮ আগস্ট ভগ্নিপতি জাহাঙ্গীর আলম বুলু বগুড়া সদর থানায় ভায়রা
উজ্জ্বল প্রামাণিককে প্রধান আসামি করে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। 

পরে সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আফতাব আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এদিকে সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে দীর্ঘ ১৬ বছর পর আদালত রবিবার দুপুরে রায় ঘোষণা করেন। 

ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি নরেশ মুখার্জ্জী বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি উজ্জ্বল প্রামাণিক শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন। গ্রেফতারের পর উচ্চ আদালতের অনুমোদন সাপেক্ষে তার রায় কার্যকর হবে। অন্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।