মাইক্রোবাস চালককে হত্যায় ৯ আসামির যাবজ্জীবন

বগুড়ায় মাইক্রোবাস চালক নুরুল হক হত্যা মামলায় ৯ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তাদের ২০ টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। হত্যার দীর্ঘ সাত বছর পর মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে বগুড়ার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হাবিবা মন্ডল এই রায় দেন। 

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বোয়ালের ডারা গ্রামের জামাল উদ্দিন মন্ডলের ছেলে শাহীন, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার হরতকিতলা গ্রামের আজগর আলীর ছেলে ইলিয়াস, একই এলাকার নেহাজ উদ্দিনের ছেলে শাহাজুদ্দিন, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দক্ষিণ ছোট গোপালপুরের মৃত আবদুর রহমান খন্দকারের ছেলে নজরুল ইসলাম নজু, বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার মহেশপুর গ্রামের মৃত জবান আলী খাঁনের ছেলে রাসেল, নরসিংদীর সদর উপজেলার ফজরকান্দি মৈশাদী মিক্রিপাড়ার ইসরাফিলের ছেলে আমির হামজা, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মিন্দি গ্রামের সান্দু গাজীর ছেলে জালাল গাজী ওরফে পলাশ গাজী, নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার দক্ষিণ কারার চরের নজরুল ইসলাম মঞ্জুর স্ত্রী রোকেয়া বেগম ও কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার গোপালপুর উত্তর সরকারটারী গ্রামের ছলেমানের ছেলে শাহিনুর রহমান।

এর মধ্যে জালাল গাজী, রোকেয়া বেগম ও শাহিনুর রহমান পলাতক রয়েছে। এছাড়া রাসেল, আমির হামজা ও
নজরুল ইসলাম নজু কুড়িগ্রামের একটি হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত।

আদালত ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২ জুলাই সকালে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর আম বাগানের পুকুরে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। গামছা দিয়ে তার হাত-পা বাঁধা ছিল। শেরপুর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় তৎকালীন এসআই
সেরাজুল ইসলাম হত্যা মামলা করেন। পরে তদন্তে জানা যায়, নিহত নুরুল হক সুনামগঞ্জের আমবাড়ি বাজার এলাকার শওকত আলীর ছেলে। তিনি পেশায় মাইক্রোবাস চালক ছিলেন। তিনি সর্বশেষ ঢাকা থেকে মাইক্রোবাস নিয়ে কুড়িগ্রামের দিকে রওনা হন।

পুলিশ ওই সূত্র ধরে কুড়িগ্রাম থেকে শাহীন, রাসেল ও নজরুল ইসলাম নজুকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার দায় স্বীকার ও জড়িত অন্য ছয় জনের নাম প্রকাশ করে। স্বীকারোক্তিতে তারা জানিয়েছিলেন, মাইক্রোবাস ছিনিয়ে নিতেই তারা চালক নুরুল হককে হত্যা করে।

পরে লাশ পুকুরে ফেলে দেয়। শেরপুর থানা পুলিশের পর সিআইডি পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে। এসআই আলতাফ হোসেন ২০১৬ সালের ২৬ আগস্ট আদালতে ৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন। আদালত সাক্ষ্য প্রমাণ শেষ মঙ্গলবার ছয় আসামির উপস্থিতিতে তাদের যাবজ্জীবন সাজা ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা
করেন। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি নাসিমুল করিম হলি জানান, তিন জন পলাতক আছেন। গ্রেফতারের পর তাদের সাজা কার্যকর হবে। আসামিদের হাজতবাসের সময় দণ্ড থেকে বাদ যাবে।