চিকিৎসকের অবহেলায় শিশুমৃত্যুর অভিযোগ

দিনাজপুরের হিলিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের অবহেলায় সাড়ে ৩ মাস বয়সী রাহাদ বাবু নামের এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালে রোগীর স্বজন ও চিকিৎসকদের মধ্যে উত্তেজেনা সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মঙ্গলবার (১৪ মর্চ) বিকাল ৩টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই ঘটনা ঘটে। নিহত রাহাদ হিলির মংলাবাজার এলাকার সিয়াবুল রাকিবের ছেলে।

শিশুটির দাদা তাছির উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঠাণ্ডাজনিত কারণে রাহাদ অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ সময় জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত স্বাস্থ্য সহকারী শিশুটিকে না দেখে তিনি গল্প করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এভাবে এক ঘণ্টা সময় চলে যায়। পরে ভর্তি ফরম লিখে কিন্তু তাতে বয়স সাড়ে তিন মাসের বদলে সাড়ে তিন বছর দিয়ে ভর্তির জন্য উপরে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে কর্তব্যরত নার্স বাচ্চার বয়স ভুল রয়েছে মর্মে সেই কাগজ আবারও ঠিক করতে নিচে পাঠিয়ে দেন। এ সময় সেই স্বাস্থ্য সহকারীর কাছে আসলে তিনি ওই ভর্তির কাগজ কেড়ে নিয়ে দায়িত্বরত চিকিৎসককে ডেকে নিয়ে আসেন। এ সময় ওই চিকিৎসক রোগীর অবস্থা খারাপ বলে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু এর মধ্যে রাহাদ মারা যায়। কিন্তু তারপরেও সে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে। এ সময় অন্য একজন চিকিৎসক এসে শিশুটি অনেক আগেই মারা গেছে বলে জানান। চিকিৎসকের অবহেলার কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।’

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মশিউর রহমান তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজ দুপুরে শিশুটিকে ভর্তি করা হয়। শিশুটির অবস্থা খারাপ জেনে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ওনারা ভর্তি রাখতে চাইলে রিক্সবন্ডে সই নিয়ে বাচ্চার চিকিৎসাপত্র লিখে দেওয়া হয়েছে। এ সময় সেই কাগজ নিয়ে রোগীর স্বজনরা দোতালায় নিয়ে যান। নিয়ম মোতাবেক নার্স তাকে ভর্তি করে নেবে ও ব্যবস্থাপত্রে লেখা ওষুধগুলো দেবেন। কিন্তু রোগীর স্বজনরা রোগীকে ভর্তি  না করে কাগজ নিয়ে বাইরে চলে যান। পরে তারা আবারও হাসপাতালে আসেন। রোগীকে আমরা তো চিকিৎসা দিয়েছি এখন ওনারা যদি নার্সের কাছে না নিয়ে যান ওষুধ না নেন তাহলে আমরা কী করবো?’

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্ব্য কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার দাস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি দিনাজপুরে একটি মিটিংয়ে আছি। ফিরে ডাক্তারদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বসবো। তবে আমরা সীমাবদ্ধতার মধ্যে সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করি। কীভাবে সেবার মান আরও বাড়ানো যায় তা চেষ্টা করছি।’