সালিশে বেত্রাঘাত করে চাচির সঙ্গে ভাতিজার বিয়ে, মেম্বার-ইমামসহ গ্রেফতার ৬

বগুড়ার শিবগঞ্জে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে গ্রাম্য সালিশে বেত্রাঘাতের পর চাচির সঙ্গে ও ভাতিজার বিয়ে দিয়েছেন এলাকাবাসী। এতে ওই নারীকে তার প্রবাসী স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করা হয়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী শিবগঞ্জ থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। সোমবার (১১ জুলাই) রাতে মামলার পর পুলিশ ইউপি সদস্য ও মসজিদের ইমামসহ ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেফতার আসামিরা হলেন- শিবগঞ্জ উপজেলার আটমূল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জিল্লুর রহমান, পশ্চিম জাহাঙ্গীরাবাদ জামে মসজিদের ইমাম শাহিনুর রহমান, কাজীর সহকারী ইলিয়াস আলী ফকির, মালোগাড়ি গ্রামের মোজাফফর মন্ডল, তোজাম মন্ডল ও মোজাম্মেল হক।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই নারীর স্বামী ও বিবাহিত এক ছেলে প্রবাসে থাকেন। অপর বিবাহিত ছেলে বাড়িতে বসবাস করেন। তিনি পারিবারিক কাজের জন্য গত ৮ জুলাই (শনিবার) রাত ১১টার দিকে প্রতিবেশী এক ভাতিজাকে বাড়িতে ডাকেন। এ সময় গ্রামের মাতবররা অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে তাদের সারা রাত আটকে রাখেন। পরদিন সকালে গ্রাম্য সালিশ বসিয়ে তাদের ঘর থেকে বের করে মারধর করা হয়।

এ সময় মসজিদের ইমাম শাহিনুর রহমান ওই নারীকে বিদেশে থাকা স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করেন। এরপর দুই জনকে ১০১টি করে বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেন। আজাদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বাঁশের কঞ্চি দিয়ে চাচি ও ভাতিজাকে বেত্রাঘাত করেন। পরে কাজীর সহকারী দুই লাখ টাকা মোহরানায় তাদের বিয়ে দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শিবগঞ্জ থানার এসআই রবিউল ইসলাম জানান, নির্যাতনের শিকার ওই নারী সোমবার রাতে থানায় ইউপি সদস্য, কাজীর সহকারী ও মসজিদের ইমামসহ আট জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ছাড়া কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। রাতেই অভিযান চালিয়ে উল্লিখিত ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।