ক্যানটিনে খাবার খেতে বসাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মতিহার হলের ক্যানটিনে খাবার খেতে বসাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে মারধর করে ক্যাম্পাস ছাড়া করেছেন বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীরা। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। এতে আরও কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী আহত হন। 

মারধরের শিকার সাকিবুল হাসান বাকি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য। এছাড়া সদ্য ঘোষিত কমিটির শীর্ষ পদপ্রত্যাশী ছিলেন। মারধরের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা, আশিকুর রহমান অপু, সাংগঠনিক সম্পাদক কাব্বিরুজ্জামান রুহুল, জাহিদ হাসান সোহাগ, হল ছাত্রলীগের নেতা আকাশ, ডালিম মির্জা, লাবিব, মারুফ, আজমি, রাফি ও ইসমাইল। তারা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিবের অনুসারী।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে মতিহার হলের ক্যানটিনে খাবার খাওয়ার জন্য একটি চেয়ারে বসেন জাহিদ হাসান নামের এক শিক্ষার্থী। কিছুক্ষণ পর শান্ত নামের এক শিক্ষার্থী এসে জাহিদকে উঠতে বলেন এবং তিনি আগে ওই চেয়ারে বসেছিলেন বলে দাবি করেন। জাহিদ তাকে অন্য চেয়ারে বসতে বললে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে জাহিদ তার বন্ধু রিফাতের কক্ষে অবস্থান নিলে শান্ত কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীকে নিয়ে এসে কক্ষের দরজায় লাথি মারেন। বিষয়টি মীমাংসার কথা বলে আরও কয়েকজন কর্মী নিয়ে কক্ষে ঢুকে তাদের দুই জনকে মারধর করেন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা ও তার অনুসারীরা। মারধরের শিকার জাহিদ ও রিফাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সাকিবুল হাসান বাকির অনুসারী। শান্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পাশে ভাস্কর সাহাকে মারধর করেন সাকিবুল ইসলাম বাকির অনুসারীরা। খবর পেয়ে মতিহার হলে আসেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। হলের গেস্ট রুমে কিছুক্ষণ অবস্থান করে হল ত্যাগ করেন তারা। তবে সেখানে কী নিয়ে আলোচনা করেছেন, সে বিষয়ে সাংবাদিকদের কিছুই জানাননি সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। সন্ধ্যায় পরিবহন মার্কেটে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাকিবুল হাসান বাকি। খবর পেয়ে ভাস্কর সাহাসহ তাদের অনুসারীরা পরিবহন মার্কেটে এসে বাকিকে মারধর করেন। সেইসঙ্গে তাকে ক্যাম্পাস ছাড়া করেন তারা।

মারধরের শিকার সাকিবুল হাসান বাকি বলেন, ‘হলে আমার অনুসারীদের মারধর করা হয়েছে শুনে ক্যাম্পাসের পরিবহন মার্কেটে আসি। এ সময় আমার কয়েকজন অনুসারী সঙ্গে ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যে আমাদের ওপর হামলা চালান নতুন কমিটির নেতাকর্মীরা। এতে আমিসহ ৮-১০ কর্মী আহত হই।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। আমরা বসে বিষয়টি মীমাংসা করে নেবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, আমরা ছাত্রলীগের দুই পক্ষকে ডেকে বিষয়টি শুনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় ক্যাম্পাসে রয়েছেন প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা।