রাজশাহী-১ আসনে মাহিয়া মাহির প্রতিদ্বন্দ্বী ১০ জন

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসন থেকে চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া ওরফে মাহি মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ওই আসনে তিনিসহ ১১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।

তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান আখতার, গোলাম রাব্বানী, চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী শাহনেওয়াজ আয়েশা আখতার জাহান, বিএনএফ প্রার্থী আল-সাআদ, তৃণমূল বিএনপি প্রার্থী জামাল খান দুদু, এনপিপির প্রার্থী নুরুন্নেসা, বাংলাদেশ সংস্কৃতি মুক্তি জোটের প্রার্থী বশির আহমেদ, জাতীয় পার্টির প্রার্থী শামসুদ্দীন ও বিএনএমের প্রার্থী শামসুজ্জোহা বাবু।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মাহিয়া মাহি মনোনয়নপত্র জমা দেন।

এরপর সাংবাদিকদের বলেন, স্বতন্ত্র বললেই আমার মনে কষ্ট লাগে। কারণ, আমি মনেপ্রাণে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শকে লালন করি। তার নৌকাকে নিজের নৌকা মনে করি। এবার প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, কোনও এলাকায় যাতে কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত না হন। আমাদের আশপাশে যারা ছোট ছোট দল আছে, হোক অন্য যেকোনও দল, তাদের যেন উৎসাহ দিই। আপনারা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। যেহেতু রাজশাহী-১ আসনে মোটামুটি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ আছে। তাই আমার মনে হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর দেখানো নির্দেশে একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার চেষ্টা করবো।

সাংবাদিকেরা একাধিক প্রার্থী থাকার বিষয়টি জানালে মাহিয়া মাহি বলেন, মনোনয়নপত্র তো অনেকেই কিনবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কতজন থাকতে পারবেন সেটি হচ্ছে বিষয়। যদি দেখা যায় একাধিক প্রার্থী আছেন। তখন আলোচনা করে দেখবেন। কিন্তু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যেন না হয় শেষ পর্যন্ত। কারণ, এটা যাচাই-বাছাইয়ের বিষয় আছে। দেখা গেলো, কেউ ছুটে গেলো। এ জন্য তিনি এখানে অংশ নিচ্ছেন।

আপনার আসনের অনেক প্রার্থী বলছেন এলাকায় আপনাকে অনেকে চেনে না। সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মাহিয়া মাহি বলেন, শতভাগ বলবো না। তবে আমার বিশ্বাস দেশের অর্ধেক মানুষ আমার সম্পর্কে জানে। নিজ এলাকার উন্নয়নের জন্য আমি এবার প্রার্থী হয়ে ভোট করছি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন, সেখানে নির্বাচন না করে রাজশাহীতে করার কারণ জানতে চাইলে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনেক প্রার্থী আছেন। সেখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হচ্ছে না। রাজশাহীর এই আসনে আমার নানাবাড়ি। এখানে আমার বেড়ে ওঠা। নির্বাচনে জয়ী হলে এলাকার মানুষকে সম্মান দেবো।

এখনও প্রচার-প্রচারণা শুরু করেননি মাহিয়া মাহি। তবে বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠান করার কথা জানালেন তিনি। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে ফুটবল টুর্নামেন্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময় বাধা পেয়েছিলেন। তিনি বলেন, বরাবরই চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি।

গত সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মাহিয়া মাহির পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন তার এক আত্মীয়। এই অভিনেত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পাননি। শেষমেশ তিনি তার নানাবাড়ির আসনে (রাজশাহী-১) স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন। তানোর শুধু তার নানাবাড়ি নয়, এখানেই তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। তিনি এখানকার মানুষ।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীর ছয়টি আসনে ৬০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও রিটানিং অফিসার শামীম আহমেদ জানান, ছয়টি আসনে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করা হয় ৬৪টি। তবে জমা পড়েছে ৬০টি মনোনয়নপত্র। এর মধ্যে দুইটি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে অনলাইনে।

তিনি জানান, রাজশাহী-১ আসনে ১১টি, রাজশাহী-২ আসনে ১৩টি, রাজশাহী-৩ আসনে ১১টি, রাজশাহী-৪ আসনে ৭টি, রাজশাহী-৫ আসনে ৯টি ও রাজশাহী-৬ আসনে ৯টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।
রাজশাহীর ছয়টি আসনে মোট ভোটার ২১ লাখ ৭৭ হাজার ৭১৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৭৩০ জন। আর নারী ভোটার ১০ লাখ ৯২ হাজার ৯৬৬ জন। এই জেলায় পুরুষের চেয়ে ৮ হাজার ২৩৬ জন নারী ভোটার বেশি। এ ছাড়া হিজড়া জনগোষ্ঠীর ১৮ ভোটার রয়েছে। জেলায় একটি সিটি করপোরেশন, ১৪টি পৌরসভা ও ৭২টি ইউনিয়ন রয়েছে।