একসঙ্গে মানুষ-মৌমাছির বসবাস

নিচে চলাফেরা করছে মানুষ, আর ওপরে ছাদের সঙ্গে ঝুলছে হাজার হাজার মৌমাছিতে ঢাকা প্রায় এক ডজন চাক। জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের পাঁচগাছি গ্রামে এক বাড়িতে এই দৃশ্য চোখে পড়ে। সেখানে একটি বাড়িতে মানুষ ও মৌমাছি একসঙ্গে বসবাস করে চলেছে অনেকদিন ধরে।

বাড়িটির মালিক মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান (হবু হাজী)। বাড়িটির দ্বিতীয় তলার বারান্দায় হাজার হাজার মৌমাছি ১০-১২টি চাক বেঁধে বাস করছে। চাকগুলো লম্বা ও বড় হয়ে এতটাই নিচে ঝুলে এসেছে যে বাড়ির মানুষকে মাথা নিচু করে চলাচল করতে হয়। অনেক সময় আনমনা চলাফেরার সময় মৌচাকে মাথা ও হাত লেগে যায়। তবে স্পর্শ লাগলেও কামড় বা হুল দেয় না মৌমাছিগুলো।

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের পাঁচগাছি গ্রামের একটি বাড়িতে মানুষ ও মৌমাছির পাশাপাশি বসবাস

এত কাছে মাছিগুলো বাসা বেঁধেছে, হুল বা কামড় দিতে পারে এমন ভয় হয় কিনা—জানতে চাইলে বাড়ির মালিক হাবিবুর রহমান বলেন, বছরের পর বছর মাছিগুলো চাক বেঁধে আছে। এখন পর্যন্ত কাউকে আঘাত করেনি।

তিনি আরও বলেন, কয়েক বছর ধরে মাছিগুলো বারান্দায় চাক বাঁধলেও একবারও মধু সংগ্রহ করা হয়নি।

হাবিবুর রহমানের বাড়িতে কেউই মৌমাছিগুলোকে উত্ত্যক্ত করে না

চেয়ারম্যানের পুত্রবধু বলেন, আগে মাত্র ছোট দুটি চাক ছিল বারান্দার দরজার কাছে। আরও মৌমাছি এসে অনেকগুলো চাক বেঁধে কয়েকবছর থেকে বাস করছে। বাড়ান্দায় চলাফেরা বা ভেজা কাপড় শুকানোর জন্য চাকের পাশেই তারে দেওয়ার সময় কাপড় ও হাত লাগলেও কামড় দেয় না। এজন্য মৌমাছিগুলোকে আমরা পরিবারের সদস্যের মতোই মনে করি।

বছরখানেক ধরে এই চাকগুলো গড়ে তুলেছে মৌমাছিরা

হবু হাজীর ছেলে আবু মুসা বলেন, মৌমাছির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে বসবাস করছি। অনেকে মধু সংগ্রহের জন্য আসে। আমরা কাটতে দেই না। মৌমাছিগুলোর প্রতি মায়া হয়েছে। মৌমাছির গুনগুন শব্দ ছাড়া এখন ঘুম আসে না। নিজ বাড়ি ছাড়া অন্য কোথাও রাত্রিযাপন করলে ঘুমের সমস্যা হয়।

চাক নষ্ট করে মধু সংগ্রহের চেষ্টা করেন না বাড়ির লোকজন

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নিয়ায কাযমীর রহমান বলেন, মৌমাছিকে বিরক্ত বা আঘাত করলে আত্মরক্ষার্থে তারাও হুল ফুটিয়ে দেয়। একই মানুষ বা গরু-ছাগলকে অতিরিক্ত হুল ফোটালে মারা যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই মৌমাছি থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান ও সাবধানতা অবলস্বন করাই ভালো।  

চাকে হাত বা মাথা লাগলেও মৌমাছির হুল ফোটানোর ঘটনা ঘটেনি বলে জানান বাড়ির লোকজন