সঞ্চয়ী হিসাবের অর্ধকোটি টাকা লোপাট করে আত্মগোপনে পোস্ট মাস্টার

রাজশাহীর তানোর ডিজিটাল পোস্ট অফিসের গ্রাহকের প্রায় অর্ধকোটি টাকা লোপাট করে গা ঢাকা দিয়েছেন পোস্ট মাস্টার। এ ঘটনায় রাজশাহীর ডাক বিভাগের পরিদর্শক মজিবুর রহমান বাদী হয়ে তানোর পোস্ট মাস্টার মকছেদ আলীকে অভিযুক্ত করে থানায় জিডি করেছেন। এর আগে রাজশাহী ডাক বিভাগের তদন্তে ঘটনার সত্যতা মেলায় দ্বিতীয় দফা তদন্তে কাজ করেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী আঞ্চলিক ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল (তদন্ত) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। তিনি জানান, গ্রাহকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ডাক বিভাগের অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছিল। টাকা গায়েবের ঘটনার বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় তানোর ডিজিটাল পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মকছেদ আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে অনেক গ্রাহক তাদের টাকার বিষয়টি জানতেন না। তাই মাইকিং করে সব গ্রাহককে তাদের হিসাব বইসহ আসতে বলা হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত ৩৩ লাখ টাকার নয়-ছয়ের তথ্য পাওয়া গেছে। আনুমানিক প্রায় অর্ধকোটি টাকার মতো সরিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। সব গ্রাহকের হিসাবটা পাওয়া পর সঠিক পরিমাণটা বলা যাবে।

এদিকে, মকছেদ আলীকে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হলেও তদন্ত সহযোগিতা করতে অফিসিয়াল চিঠি দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনি তদন্ত কমিটিকে সহযোগিতা করলেও এখন আত্মগোপনে চলে গেছেন। সোমবার অফিসে উপস্থিত থাকতে বলা হলেও উপস্থিত হননি। ফোনও বন্ধ রেখেছেন।

ভুক্তভোগীদের একজন তানোর উপজেলার কামারগাঁ বারঘরিয়া গ্রামের জয়নাল আবেদীন। তিনি বলেন, আমি ২০২১ সালে বাংলাদেশ পোস্ট অফিস সঞ্চয় ব্যাংকে তানোর পোস্ট অফিসে মেয়াদি আমানত হিসাবে এফডিএ করি ছয় লাখ টাকা। পরে ২০২২ সালে আবারও চার লাখ টাকা এফডিএ করি। প্রথম বারের ছয় লাখ টাকার সরকারি খাতাসহ পাস বইতে আছে। কিন্তু পরের চার লাখ টাকা আমার পাস বইতে হাতে লিখে তুলে দিয়েছে। কিন্তু সরকারি রেজিস্ট্রি খাতায় লেখা নেই। এই চার লাখ টাকার কোনও হদিস নেই।

অরুপ কুমার নামে এক গ্রাহকের পাঁচ লাখ ৩৮ হাজার, পুষ্পা রানীর পাঁচ লাখ, সাবিয়া খাতুনের চার লাখ, কৃষ্ণা রানীর পাঁচ লাখ, রাশেদুলের তিন লাখ, পার্থ দাসের এক লাখ, আঙ্গুরা খাতুনের পাঁচ লাখ, রেজিয়া খাতুনের পাঁচ লাখ টাকাসহ প্রায় অর্ধকোটি টাকার হদিস পেতে কাজ করছে ডাক বিভাগ।

তানোর থানার ওসি আব্দুর রহিম জানান, এ ঘটনায় জিডি হয়েছে। আইন অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।