রাজশাহীতে ডিপ্লোমা-বিএসসি নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ১০

রাজশাহী নার্সিং কলেজে বিএসসি ও ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বিএসসি নার্সিং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের কয়েকজন নার্সও। পরে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে হামলা চালান। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়। আহতরা রামেক হাসপাতালের চার নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও সংঘর্ষেও ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে তারা আন্দোলন নিয়ে কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন। তখন হঠাৎ সেখানে উপস্থিত হন বিএসসি ইন নার্সিংয়ের কিছু শিক্ষার্থী। তারা বাগবিতণ্ডা শুরু করেন। ডিপ্লোমার শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারা কটূক্তি করেন। একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতাল থেকে কয়েকজন বিএসসি নার্সও এসে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। তারা গেট ভেঙে কলেজে ভাঙচুর চালান। ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে।

সংঘর্ষ ও ভাঙচুর শুরু হলে আট ভ্যান পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর মধ্যে আহতদের রামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখন ডিপ্লোমা ইন নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীরাও হাসপাতালে যান। একপর্যায়ে তারা ৪ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে কয়েকজন বিএসসি নার্সকে লাঞ্ছিত করেন। এ ছাড়া তারা ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছেন, এমন অভিযোগে তারা হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহম্মদের কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন সেনাবাহিনীর একটি দল এসে তাদের আটকে দেন। পরে পরিচালক কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

রাজশাহী নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মতিয়ারা খাতুন বলেন, ‌‘ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনা শেষ করে বিএ-এর সমমান চান। আর বিএসসি নার্স ও এর শিক্ষার্থীরা এর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে দুই পক্ষেরই টানা আন্দোলন কর্মসূচি চলছে। এর জের ধরেই দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষ শুরুর সময় আমি একটা মিটিংয়ে ছিলাম। তদন্ত করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহম্মদ বলেন, ‘আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরাও হাসপাতালে এসেছিল। তখন তারা ওয়ার্ডে যায়, আমার অফিসের দিকেও আসার চেষ্টা করেন। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি শান্ত করেছে। এ ঘটনার তদন্ত হবে। দুই পক্ষেই যারা যারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের শাস্তি হবে।’

রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষে ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে সরিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। কিন্তু ডিপ্লোমার শিক্ষার্থীরা আবার হাসপাতালে গিয়ে ঝামেলা করেছেন। সেটিও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এখন কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।’