সোনাতলায় ইউপি নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আহত ১৫ : ১৪৪ ধারা জারি

বগুড়া সোনাতলা সংঘর্ষ

বগুড়ার সোনাতলার পাঠানপাড়া গ্রামে ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দুই দফা সংঘর্ষে উভয়পক্ষের নারীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ  ২৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। সহিংসতে এড়াতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শনিবার বেলা ১টা থেকে রবিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ওই গ্রামে ১৪৪ ধারা জারি করেছেন।

আহতরা হলেন, মিঠু (২২), সাহেব আলী (৩৪), ঠাণ্ডা মিয়া (৩৫), মিনহাজুল (২৮), আছমা বেগম (২৮), তরিকুল ইসলাম (২৬), মোমেনা বেগম (২৬), আজাদ (২২), জবেদ আলী (৪৫), লিটন মিয়া (২৭), টুকু মিয়া (৪৫), শায়েন আলী প্রামাণিক (৫৫), জয়নাল শাহ (৫০), ছমির উদ্দিনসহ (৫০) আরেকজনের নাম জানা যায়নি। তাদের সোনাতলাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছে,সোনাতলা উপজেলার পাঠানপাড়া গ্রামে পাল বাইশা খাস বিলের জমির মালিকানা নিয়ে ব্যাপারি ও মিয়া পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। বিভিন্ন সময় তাদের মধ্যে সংঘর্ষও হয়েছে। গত ৩১ মার্চ দ্বিতীয় ধাপে সোনাতলা উপজেলার ৬ ইউনিয়নে ভোট হয়। দিগদাইড় ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে সদস্য পদে বেপারি পক্ষ থেকে মোজা আকন্দের ছেলে সেলিম হোসেন ও মিয়া পক্ষ থেকে মৃত আজগর আলীর ছেলে আবদুস সামাদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে মিয়া পক্ষের সামাদ জয়লাভ করেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার বিকালে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা -ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শনিবার সকাল ১০টার দিকে বিজয়ী সদস্য সামাদ ও তার লোকজন পাল বাইশা বিলের জমিতে থাকা সেলিমের লাগানো কাঁচা ধান কাটতে শুরু করেন। তখন পরাজিত সদস্য সেলিম ও তার লোকজন বাধা দেন। এতে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

খবর পেয়ে সোনাতলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। ব্যর্থ হলে শর্ট গান দিয়ে ২৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। পরে বগুড়া থেকে সিনিয়র এএসপি (এ সার্কেল) সাব্বির আহম্মেদ সরফরাজের নেতেৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

তবে সোনাতলা থানার ওসি আবদুল মোতালেব জানান, নির্বাচন নিয়ে নয়, বিলের জমির মালিকানা নিয়ে মিয়া ও বেপারি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ৩-৪ জন সামান্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। শনিবার বিকাল পর্যন্ত কোনও পক্ষই থানায় অভিযোগ করেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান,যে কোনও ধরণের সহিংসতা এড়াতে শনিবার বেলা ১টা থেকে রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত পাঠানপাড়া গ্রামে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

/জেবি/