হরিপুর সীমান্তে বসেছিল দুই বাংলার মিলনমেলা

ঠাকুরগাঁওয়ে বসেছিল দুই বাংলার মিলনমেলা

কালী পূজার পরপরই প্রতিবছর হরিপুর সীমান্তে আয়োজন করা হয় মিলনমলোর। নাড়ীর টানে ক্ষণিকের জন্য হলেও স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে ছুটে আসে বাংলাদেশ ও ভারতের লোকজন। বছরের পর বছর ধরেই এভাবে চলছে এই মিলনমেলা। তেমনি মিলনমেলা বসেছিল শুক্রবার সকালে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরের ভাতুরিয়া ইউনিয়নের টেংরিয়া গোবিন্দপুর জামরকালিতে (পাথরকালি)।

ভারত ও বাংলাদেশ ভৌগলিক সীমারেখা টেনে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে আলাদা করা হয়েছে। তবে সেই বেড়া আলাদা করতে পারেনি দুই দেশের মানুষকে। তাইতো সুযোগ পেলেই তারা ছুটে যান সীমান্তে। দেখা করেন একে অন্যের সঙ্গে। পেতে চান স্বজনদের সান্নিধ্য। বিনিময় করেন মনের জমানো হাজারো না বলা কথা।

শুক্রবার হরিপুরের নাগর নদের পাড়ে কোচল এবং চাপাসাড় সীমান্তে ৬৮ পিলারের পাশ ঘেঁষে ৩৪৬ পিলার পর্যন্ত সীমান্তের দু’ধারে সকাল ১১টা-বিকাল ৪টা পযর্ন্ত চলে দুই বাংলার মানুষের মিলনমেলা। কেউ মেয়ের জন্য কাপড় নিয়ে এসেছিলেন। কেউ বা অনেক পথ পাড়ি দিয়ে বাবার জন্য খাবার নিয়ে দেখা করতে এসেছেন।

কথা হয় রানীশংকৈল থেকে আসা ডা.সেমন্ত রায়ের সঙ্গে। তিনি জানান, ওপারে থাকা ছেলের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন।

বিনতী বালার বিয়ে হয়েছে ওপারে। তিনি এসেছেন বাবার সঙ্গে দেখা করতে। তাইতো বাবার জন্য কাপড় আর কিছু রান্না করা খাবার নিয়ে এসেছেন।

শুক্রবার ভোর থেকে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে হাজার হাজার বাংলাদেশের মানুষ ভারতীয় আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে সীমান্তে আসে।

সকাল ১১টার  দিকে দুই বাংলার মিলন মেলার অনুমতি দেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। ফিরে যাওয়ার কান্নায় ভেঙে পড়েন সবাই।

মিলনমেলাকে আরও আন্তরিক করতে চেকপোস্ট বসানোসহ নানাসুবিধা দেওয়ার দাবি করেছে সচেতন মহল। 

হরিপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুরল ইসলাম বলেন, হরিপুর উপজেলার দেশ ভাগের আগে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অধীনে ছিল। ফলে দেশ ভাগের পর আত্মীয়-স্বজনরা দুই দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তাই সারা বছর এদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতে পারে না। অপেক্ষা করে থাকেন পাথর কালির মেলার জন্য।

 

/এসটি/