কুড়িগ্রাম সীমান্তে হাতি-আতঙ্কে নির্ঘুম ১০ গ্রামের বাসিন্দা

আগুন জ্বেলে ধোঁয়া তৈরি করে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা চলছে রৌমারীতে

ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে আসা হাতির আতঙ্কে কয়েকদিন যাবত নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার পার্শ্ববর্তী কয়েক গ্রামের বাসিন্দা। হাতিগুলো এখনও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সীমান্তবর্তী এলাকায় রয়েছে বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানান রৌমারী থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি ) এবিএম সাজেদুল ইসলাম।  

রৌমারী উপজেলা বন কর্মকর্তা এ জেড এম ইকবাল হোসাইন খান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, হাতিগুলো সোমবার পুনরায় ভারতে ফিরে গেছে। তবে তারা আবারও প্রবেশ করতে পারে।

এর আগে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে রৌমারী সীমান্তের ১০৬৭ আর্ন্তজাতিক সীমানা পিলারের পাশ দিয়ে ভারতের গারো পাহাড় থেকে ১৫ থেকে ১৬ টি হাতির একটি সংঘবদ্ধ দল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। যদিও বন কর্মকর্তার দেওয়া তথ্যে হাতি রবিবার (৪ ডিসেম্বর) প্রবেশ করে বলে জানা যায়। এসব হাতি দিনের বেলা কাটাতারের নিকটবর্তী নোম্যানসল্যান্ডে অবস্থান করলেও রাতের বেলা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে সীমান্তবর্তী জমির ফসলের ক্ষতি সাধন করছে।

এ অবস্থায় রৌমারী সদর ও যাদুরচর ইউনিয়নের বড়াইবাড়ি, বারবান্দা, চুলিয়ারচর, খেয়ারচরসহ ১০ গ্রামের বাসিন্দা গত দুই রাত থেকে আগুন জ্বালিয়ে ও ঢোল পিটিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করছে।

খেয়ারচর এলাকার ইউপি সদস্য হায়দার আলী জানায়, রৌমারী উপজেলা সীমান্ত লাগোয়া ভারতের গারো ও বলদাংগিরি পাহাড় রয়েছে। এসব সীমান্তের বেশিভার এলাকা অরক্ষিত থাকায় প্রায় সময় হাতির পাল প্রবেশ করে ফসল ও ঘরবাড়ীর ক্ষতি করে চলে যায়।

যে কোনও সময় হাতির দলটি গ্রামে প্রবেশ করে বাড়ি-ঘরসহ জানমালের ক্ষতির আশংকা করছে এসব মানুষের। তারা আতংকিত হয়ে এ ব্যপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

রৌমারী থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি ) এবিএম সাজেদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ভারত থেকে আসা হাতিগুলো এখনও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সীমান্তবর্তী এলাকায় রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনও ক্ষয়ক্ষতি না করলেও যে কোনও মহূর্তে হাতিগুলো মানুষের জান-মালের ক্ষতি করতে পারে বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানান ওসি।

হাতির দল নষ্ট করছে বিস্তীর্ণ সর্ষে ক্ষেত

রৌমারী উপজেলা বন কর্মকর্তা এ জেড এম ইকবাল হোসাইন খান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, রবিবার (৪ ডিসেম্বর) ১৫/১৬ টি ভারতীয় হাতি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। হাতিগুলো বাংলাদেশ সীমান্তে মূলত খাদ্যের সন্ধানে প্রবেশ করেছে। এরা কয়েক একর জমির আখ এবং ধান নষ্ট করেছে। আমরা বন বিভাগের পক্ষ থেকে এলাকার মানুষদের সাবধান করে আগুন জ্বালিয়ে ও ঢাক ঢোল পিটিয়ে হাতি তাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি। সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে হাতিগুলো ভারতীয় সীমান্তের ভিতর প্রবেশ করেছে। তবে এগুলো আবারও খাদ্যের জন্য বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে।

এ ব্যাপারে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন তালুকদার এর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

/ এইচকে/