করতোয়ায় ২৫ ড্রেজার মেশিন, চলছে বালু উত্তোলন

balu-1

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের ২৫টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। এতে নদী ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে নদী তীরে থাকা ফসলি জমি ও ভিটেমাটি বিলীনের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এছাড়া বালু বোঝাই ট্রাক্টর ও কাকড়া (মহেন্দ্র) গাড়ি অবাধে চলাচল করায় ইতোমধ্যে ৫-৬ গ্রামের কাঁচা রাস্তা ও মহাসড়কের বেশ কিছু এলাকা দিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।

দীর্ঘদিন ধরে এভাবে বালু উত্তোলন করা হলেও বন্ধের কোনও উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। তাছাড়া অবৈধ্ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী কয়েকবার লিখিতভাবে বিষয়টি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছে। কিন্তু তারপরও বালু উত্তোলন বন্ধে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন।

balu-5

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের সমসপাড়া গ্রামের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীতে অন্তত ২৫টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে রাতদিন চলছে বালু তোলা হচ্ছে। বালু উত্তোলনের পর বিক্রির জন্য শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ট্রাক্টর ও কাকড়া যোগে আনা-নেওয়ার ফলে এলাকার রাস্তাঘাট চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়া বালু উত্তোলনের ফলে এলাকার বেশ কিছু আবাদি জমি ও বসতভিটে নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বালু উত্তোলনের কারণে ইতিমধ্যে সমসপাড়া গ্রামের করতোয়া নদীর তীর ঘেঁষে ১০-১৫ বিঘা জমি নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে।

স্থানীয় আবুল করীম, রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘করতোয়া নদীতে ২৫টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তোলার সঙ্গে  বাবু, খাজা ও হাফিজার জড়িত। তাদের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিদিন এসব বালু উত্তোলনের পর বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে।’

Balu-2

সমসপাড়া গ্রামের জাফুরুল ইসলাম বলেন, ‘করতোয়া নদী থেকে প্রতিদিন এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ইতোমধ্যে নিজের প্রায় ৪ বিঘা আবাদি জমি নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে। আরও বেশ কিছু জমি নদীতে বিলীনের আশঙ্কা রয়েছে। দ্রুত বালু উত্তোলন বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।’

একই গ্রামের আনারুল ইসলাম বলেন, ‘বালু উত্তোলনের পর ট্রাক্টর দিয়ে বালু আনা-নেওয়ার কারণে এলাকার বেশ কয়েকটি কাঁচা রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এসব রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগ বেড়েছে। এছাড়া পায়ে হেঁটেও চলাচলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’

Balu-3

আফসার আলী নামে আরেকজন বলেন, ‘বালু উত্তোলন বন্ধ করতে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও তা বন্ধ হয়নি। এছাড়া অভিযোগ দেওয়ার কারণে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতরা তাদের অভিযোগ তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন। অভিযোগ না তুললে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেবে বলেও হুমকি দিচ্ছেন।’

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাফিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বাবু, খাজা ও হাফিজার অনেককে ম্যানেজ করে বালু উত্তোলন করছে। তাই বালু উত্তোলন বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।’

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল হান্নান বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। দ্রুত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: অন্ধকার থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেন তারা

 /এসটি/