শাস্ত্রীয় সংগীত গুরু ওস্তাদ সাইমুদ আলী খান আর নেই

শাস্ত্রীয় সংগীত গুরু ওস্তাদ সাইমুদ আলী খানশাস্ত্রীয় সংগীতের নিবেদিতপ্রাণ সাধক ওস্তাদ সাইমুদ আলী খান মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

ওস্তাদ সাইমুদ আলী দীর্ঘদিন লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে, ২ মেয়েসহ অসংখ্য ভক্ত ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

সোমবার রাত ৯টায় জেলা সদরের তফিউদ্দিন স্কুলে মাঠে নামাজের জানাজা শেষে তাকে ফরিদপুর গোরস্থানে দাফন করা হবে।

ওস্তাদ সাইমুদ আলী খান ১৯৩৫ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদহ জেলার রাতুয়া থানার আড়াইডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৬ সালে মেট্রিকুলেশন পাশ করেন এবং সেখানেই তিনি নৃপেন্দ্রনাথ দাস ওরফে টুলুবাবুর কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতের ভাবময়তা ও জ্ঞানলব্ধ করেন। ১৯৬৮ সালের ১৩ জুলাই তিনি স্ত্রীসহ বাংলাদেশের দিনাজপুরে চলে আসেন। পরের দিন দিনাজপুর নাট্য সমিতিতে তার ৩ ঘণ্টাব্যাপী একক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তার চমৎকার সংগীত পরিবেশনায় সেই সময়ে সবাই তাকে দিনাজপুরে স্থায়ীভাবে থাকার অনুরোধ করেন এবং পরিবার-পরিকল্পনা অধিদফতরে তার চাকরি হয়।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে তিনি দিনাজপুরের শিল্পী সমাজকে সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দীপনা যোগাতে ‘জয়বাংলা শিল্পগোষ্ঠী’র হয়ে গণসংগীত পরিবেশন করে তিনি প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখেন। যুদ্ধ করে এই দেশকে স্বাধীন করার মায়ার টানে তিনি শেষ জীবনে আর ভারতে ফিরে যেতে চাননি। বাংলাদেশ বেতারে ১৯৭৪-৭৫ সালে উচ্চাঙ্গ সংগীত পরিবেশন করতেন ওস্তাদ সাইমুদ আলী খান। তিনি দিনাজপুর সংগীত মহাবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন নবরুপী ও সুরবানী সংগীত শিক্ষা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ও গুরু হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে ছায়ানটের একটি অনুষ্ঠানে যোগদান করার পরে দিনাজপুরে ফিরে এসে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত দেড় মাস ধরে গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

/এআর/