শুরুর একদিন পরই কুড়িগ্রামে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি বন্ধ

5fb895e23f488c723bce482824ded8c2-576f6112b811bশুরুর একদিন পরই কুড়িগ্রামে বন্ধ রাখা হয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রি। রমজান মাসকে সামনে রেখে সোমবার থেকে (১৫ মে) সারাদেশে এ কার্যক্রম শুরু হয়। কুড়িগ্রাম জেলা শহরেও দুটি স্থানে (জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পৌরসভার সামনে) টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়। তবে একদিন পরই দুটি স্থানের একটিতেও পণ্য বিক্রি করতে দেখা যায়নি।

মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ওই দুটি স্থানসহ শহরের কয়েকটি জায়গায় টিসিবি পণ্যবাহী ট্রাকের খোঁজ করলে কোথাও তা পাওয়া যায়নি বলে জানান স্থানীয় জনতা ও ব্যবসায়ীরা।

এদিকে গতকাল ট্রাকে করে টিসিবি পণ্য বিক্রি শুরু হলেও তা শুধুমাত্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গনে হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের চেয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাই বেশি কিনতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন টিসিবির স্থানীয় ডিলার মেসার্স শাহীন ট্রেডার্সের মালিক মো.শাহীন।

ডিলার শাহীন মোবাইলে বলেন, দুটি স্থানে টিসিবি পণ্য বিক্রির কথা থাকলেও আমরা শুধুমাত্র জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিক্রি করেছি। কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই বেশি পণ্য কিনেছেন। তারা অনেকে চার কেজির জায়গায় পাঁচ কেজি করেও পণ্য নিয়েছেন। ফলে সাধারণ মানুষ খুব বেশি পণ্য কিনতে পারেননি। একদিনে বরাদ্দের চেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

আজ পণ্য বিক্রি হচ্ছে না কেন, জানতে চাইলে ডিলার শাহীন জানান, একটু ঝামেলার কারণে এখনও গাড়ি বের হয়নি, কিছুক্ষণের মধ্যে বের হবে।

তবে বেলা তিনটা পর্যন্ত নির্ধারীত জায়গার একটিতেও কোনও পণ্যবাহী ট্রাক দেখা যায়নি। ফলে শুরুর একদিনের মাথায় টিসিবি পণ্য বিক্রি কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। এছাড়া পণ্য বিক্রি সংক্রান্ত কোনও প্রচারণা না থাকায় সাধারণ মানুষ এ ব্যাপারে অন্ধকারে রয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে কুড়িগ্রামের নব নিযুক্ত জেলা প্রশাসক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খানের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিন ফোন রিসিভ করেননি।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ব্যবসা-বাণিজ্য শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার শামীমা সুলতানা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ ব্যাপারে জেনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে ১৮৫টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে বিক্রি হবে এসব পণ্য। এর মধ্যে ঢাকায় ৩৩টি ও চট্টগ্রামে ১০টি খোলা ট্রাকে চলবে পণ্য বিক্রি। অন্য বিভাগীয় শহরগুলোর প্রতিটিতে পাঁচটি করে এবং বাকি জেলা সদরগুলোতে দুইটি করে ট্রাকে পণ্য বিক্রি হবে। প্রতিটি ট্রাকে প্রতিদিন আড়াইশ থেকে তিনশ কেজি করে মসুর ডাল, তিনশ থেকে চারশ কেজি চিনি, তিনশ থেকে চারশ কেজি ছোলা, ২০ থেকে ৩০ কেজি খেজুর এবং তিনশ থেকে চারশ লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি করা হবে।

প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ৮৫ টাকা, প্রতি কেজি চিনি ৫৫ টাকা, মসুর ডাল ৮০ টাকা, ছোলা ৭০ টাকা ও খেজুর ১২০ টাকায় বিক্রি করবে প্রতিষ্ঠানটি।
একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ চার কেজি চিনি, তিন কেজি মসুর ডাল, পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল, পাঁচ কেজি ছোলা ও এক কেজি খেজুর কিনতে পারবেন।

কিন্তু কার্যক্রমের শুরুতেই কুড়িগ্রামে টিসিবি পণ্য বিক্রি নিয়ে গড়িমসি দেখা দেওয়ায় সাধারণ জনগণ এর সুফল ভোগ করতে পারবে কি না তা নিয়ে জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে।

/এআর/