জনবল সংকটে উৎপাদন বন্ধের আশঙ্কা সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানাতীব্র জনবল সংকটে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে সৈয়দপুরে দেশের বৃহৎ রেলওয়ে কারাখানয়। দক্ষ শ্রমিক অবসরে যাওয়া, নতুন শ্রমিক নিয়োগ না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছেন কারখানার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

রেলওয়ে কারখানা সূত্র জানায়,বর্তমানে শ্রমিক আছে মাত্র ৩৭ শতাংশ। জনবলের এতটাই সংকট যে,কারখানার ভেতরে থাকা ২৯টি শপের শ্রমিকদের নিয়ে দৈনন্দিন কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। লোকবলের অভাবে ভারি মেশিনগুলোর অচল হয়ে পড়ে আছে।

কারখানার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন,‘এভাবে লোকবল কমতে থাকলে এক সময় হয়তো উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে।’ 

রেলওয়ে শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘আমরা ভীত সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার লোকবল সংকটের বর্তমান চিত্র দেখে। যে হারে শ্রমিকরা অবসরে যাচ্ছেন তাদের জায়গা পূরণ হবে কিভাবে।  দক্ষ কারিগর তৈরি হতেও সময়ের প্রয়োজন। দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু না হলে কারিগরের সংকট প্রকট আকার ধারণ করবে।’

সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক মুহাম্মদ কুদরত-ই খুদা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আদালতে মামলাজনিত কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ থাকায় জনবল নিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না।’

১১০ একর জমির উপর স্থাপিত সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক বিভাগে ৩ হাজার ১৭১ জন শ্রমিকের প্রয়োজন হলেও দুই বিভাগে রয়েছে মাত্র ১ হাজার ২৬২ জন।

এদিকে,নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ের কমপক্ষে ৩০০ একর জমি অবৈধ দখলে চলে গেছে। এসব জমিতে গড়ে উঠেছে প্রায় ৫ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি।

তিনি আরও বলেন,‘কারখানার সম্পত্তির পরিমাণ ৮০০ একর। এরমধ্যে পৌর বাজারে রয়েছে ২৫ একর। রেলওয়ের কারখানায় কর্মরত কর্মচারীদের জন্য শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাসা-বাড়ি ও কোয়ার্টার রয়েছে ২৪৮৮টি। মাত্র ১০১৮টি বাসা-বাড়ি প্রকৃত কর্মচারী পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করলেও ১৪৭০টি রয়েছে অবৈধ দখলে। কর্মরতদের মধ্যে অনেকেই তাদের দখলে থাকা বাসা-বাড়ির আশপাশের ফাঁকা অংশটুকুও বিক্রি করছেন। অবসরপ্রাপ্ত অনেক কর্মচারী তাদের দখলে থাকা বাড়িটি মোটা অংকের বিনিময়ে অন্যের কাছে বিক্রি করে চলে যাচ্ছেন।’

/এসটি/