বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এখনও অনেক জমির ফসল পানিতে পুরোপুরি নিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে। কোনও কোনও ফসলি জমিতে এখনও বুক সমান উচ্চতায় পানি বিরাজ করছে। কিছু অপেক্ষাকৃত উঁচু জমি থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও সেসব জমির রোপা আমন, ধানের চারা ও সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। নাগেশ্বরী উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুবুর রশিদ জানান, এ বছর চলতি আমন মৌসুমে কৃষকরা ১১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে ধান লাগিয়েছে। কিন্তু বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে ৮ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির আমন ধান তলিয়ে গেছে। বর্ষাকালীন সবজি ক্ষেতও তলিয়ে গেছে।
একই অবস্থা বিরাজ করছে জেলার উলিপুর, চিলমারী, রাজিবপুর, ভূরুঙ্গামারী,রৌমারী উপজেলাসহ ৯টি উপজেলাতেই।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন ফসলি জমি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় জেলার প্রায় সাড়ে তিন লাখ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু ৪৮ হাজার হেক্টর রোপা আমন ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় প্রায় দুই লাখ ৯০ হাজার কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। আর বীজতলা ও সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অর্ধলক্ষাধিক কৃষক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, খামার বাড়ির উপ-পরিচালক মো. মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা এখন পানি নেমে যাওয়ার অপেক্ষা করছি। পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পলিযুক্ত জমিগুলোতে ধান বীজ ছিটিয়ে বপন করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করবো। আর সবজি চাষি কৃষকদের আগাম সবজি লাগানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করা হবে।’
কুড়িগ্রাম জেলার কৃষকদের যথেষ্ট কর্মদক্ষতা রয়েছে উল্লেখ করে এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, জেলার কৃষকদের সহযোগিতা করার জন্য আমরা রয়েছি। স্থানীয় পর্যায়ে সংরক্ষিত ‘ছিটানো ধানবীজ’ ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)’র মাধ্যমে উচ্চ ফলনশীল জাতের ‘ছিটানো ধানবীজ’ সরবরাহ করা হবে। এ সকল ধান বীজ ব্লক পর্যায়ে কৃষকদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
/বিএল/
আরও পড়ুন:
নওগাঁয় বন্যা কবলিত আরও ৩ উপজেলা, বাড়ছে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা